ম্যাচে ফেভারিট ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তাই বলে এমন পারফরম্যান্স হয়তো কেউই আশা করেনি। নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে উজ্জীবিত টাইগারদের থেকে আরো ভালো কিছুর স্বপ্নই দেখেছিল ভক্তরা। কিন্তু ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই প্রোটিয়াদের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে বাংলাদেশ।
বুধবার সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এসসিজি) টি-২০ বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আগে ব্যাট করে রুশোর সেঞ্চুরিতে পাঁচ উইকেটে ২০৫ রান সংগ্রহ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ১০১ রানেই গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। টাইগারদের হার ১০৪ রানে।
বাংলাদেশের হয়ে রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা দারুণ করেছিলেন সৌম্য সরকার ও নাজমুল হোসেন শান্ত। কাগিসো রাবাদার করা প্রথম ওভারে পরপর দুই বলে দুটি ছক্কা হাঁকান সৌম্য। যা দেখা ছিল চোখের শান্তি।
তবে এই শুরুটা বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেননি সৌম্য। আনরিখ নরকিয়ার বলে ১৫ রানে আউট হন এ বাঁহাতি ব্যাটার। একই ওভারে বোল্ড হন ৯ রান করা শান্ত। সাকিবও নরকিয়ার বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে এক রানে ফেরেন।
এরপর ইনিংস জুড়ে আসা যাওয়ার মাঝেই ছিলেন টাইগার ব্যাটাররা। একপ্রান্ত আগলে রেখে সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন লিটন দাস। মিরাজ ১১ রানের ইনিংস খেলেন। শেষদিকে তাসকিন ও মুস্তাফিজের ১২ রানের জুটি হারের ব্যবধানটাই শুধু কমিয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে নরকিয়া চারটি, সামসি তিনটি এবং কাগিসো রাবাদা ও কেশভ মহারাজ একটি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। প্রথম ওভারেই বাভুমাকে ফিরিয়ে আশার পালে হাওয়া লাগিয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ। কিন্তু এরপরের গল্পটা শুধুই হতাশার।
শুরুর আনন্দ মিলিয়ে দিতে যেন প্রতিযোগিতায় নামেন ডি কক ও রাইলি রুশো। দুজনে মিলে একেরপর এক বল আছড়ে ফেলতে থাকেন বাউন্ডারির বাইরে। ডি কক-রুশোর আক্রমণে প্রথম পাওয়ার প্লে শেষে প্রোটিয়াদের সংগ্রহ ছিল ৬৪ রান। যা চলতি বছরে তাদের সর্বোচ্চ।
মাঝে বৃষ্টির বাঁধায় খেলা কিছুক্ষণ বন্ধ থাকলেও সেটা কক-রুশোর ছন্দপতন ঘটাতে পারেনি। পুনরায় খেলা শুরু হওয়ার পরও আপন ছন্দে খেলতে থাকেন তারা।
পার্ট টাইমার আফিফ হোসেনের বলে ৬৩ রানে ডি কক ফিরলেও থামেনি রুশো ঝড়। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি করে তবেই থামেন তিনি। সাকিবের বলে ১০৯ রানে আউট হন এ ব্যাটার।
সাজঘরে ফেরার আগে রেকর্ডবুক তোলপাড় করে যান রুশো। টি-২০তে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক টি-২০তে যা দ্বিতীয়বার দেখল বিশ্ব। এর আগে এই কীর্তি গড়েছিলেন ফ্রান্সের এক ব্যাটার।
এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসে প্রথম ব্যাটার হিসেবে টি-২০ বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করেছেন রুশো। অর্থাৎ এটাই টি-২০ বিশ্বকাপে কোনো প্রোটিয়া ব্যাটারের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। বিশ্বকাপ ইতিহাসে যা পঞ্চম সর্বোচ্চ।
ডি ককের সঙ্গে রুশোর ১৬৩ রানের জুটি দ্বিতীয় উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। সর্বোচ্চ রানের জুটিটি ১৬৬ রানের। ২০১০ বিশ্বকাপে ব্রিজটাউনে উইন্ডিজের বিপক্ষে যা গড়েছিলেন দুই লংকান কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারা ও মাহেলা জয়াবর্ধনে।
শেষদিকে আর কেউই আশানুরূপ খেলতে না পারায় আরো বড় হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। বাংলাদেশের হয়ে সাকিব দুটি এবং হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ ও আফিফ হোসেন একটি করে উইকেট শিকার করেন।