আগের দিন থেকেই প্রায় বিচ্ছিন্ন বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহ। আশপাশের জেলার সঙ্গে বাস যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হয় কোনো ঘোষণা ছাড়াই। অন্যান্য যানবাহনে চালানো হয় তল্লাশি। সমাবেশ ঘিরে টান টান উত্তেজনা ছিল আগে থেকেই। পাল্টা সমাবেশ করার কথা বলা হয়েছিল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। কিন্তু নানা কৌশলে নির্ধারিত সমাবেশ বাস্তবায়ন করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। বাধার পাহাড় ডিঙিয়ে বিভাগীয় এই গণসমাবেশে ঢল নামে নেতাকর্মীদের। লাখো মানুষের উপস্থিতিতে বিশাল এই সমাবেশ করে চাঙ্গা ময়মনসিংহ বিএনপি। উচ্ছ্বসিত কেন্দ্রীয় নেতারাও। তারা বলেছেন, ময়মনসিংহের এই সমাবেশ প্রমাণ করে বাংলাদেশের মানুষ আর কোনো বাধা মানবে না।
পূর্ব ঘোষিত এই সমাবেশ নিয়ে হয়েছে নানা নাটকীয়তা। সমাবেশের জন্য বিএনপি’র পক্ষ থেকে গত ৬ই অক্টোবর প্রশাসনের কাছে অনুমতি চাইলেও প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। এমনকি বিএনপি যাতে সমাবেশ করতে না পারে সেজন্য আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিল। সমাবেশের অনুমতি না পেলেও একদিন আগেই ময়মনসিংহে জড়ো হতে শুরু করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা।
বিভাগীয় সমাবেশের দায়িত্বে থাকা নেতারাও যেকোনো মূল্যে সমাবেশ করার কথা জানিয়ে আসছিলেন। ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠে প্রশাসনের অনুমতি না পেয়ে মৌখিক অনুমতি নিয়ে স্বেচ্ছায় সমাবেশ স্থান পরিবতন করে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মাঠে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত হয়। তবে সেখানেও বাধে বিপত্তি। পুরো মাঠে পানি। খানা-খন্দ আর কর্দমাক্ত। গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের আশেপাশে বাড়তে থাকে নেতাকমীদের চাপ। বিএনপি’র পক্ষ থেকে শুরু হয় মাঠ প্রস্তুত করার কাজ। আসে বালু ভর্তি ট্রাক। ট্রাক থেকে মাঠে ফেলা হয় বালু। রাতেই একে একে ৪০ ট্রাক বালু দিয়ে সমাবেশস্থলকে প্রস্তুত করে বিএনপি। রাত সাড়ে ১১টার দিকে শুরু হয় মঞ্চ তৈরির কাজ। শেষ হয় সমাবেশের দিন সকাল ৭টায়। এর আগে শুক্রবার রাতে শহরে সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশারফ হোসেনের বাড়ির সামনে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় সরকারি দলের লোকজন। উভয় পক্ষের মধ্যে চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। বিএনপির দাবি- সরকারি দলের নেতাকর্মীরা প্রায় ৫০টি মোটরসাইকেল দিয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে মোশারফ হোসেনের বাড়ির সামনে মহড়া দেয়। একপর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে তারা।
পরে বিএনপি নেতারা লাঠিসোঁটা নিয়ে ধাওয়া করলে তারা সটকে পড়েন। গতকাল পুরো ময়মনসিংহে সকাল থেকে কার্যত অঘোষিত হরতাল পালিত হয়। সারাদিনে চলাচল করেনি কোনো ধরনের যাত্রীবাহী বাস। আন্তঃজেলা ও জেলার অভ্যন্তরীণ সকল রুটের বাস বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েন সমাবেশে আসা নেতাকর্মীসহ জেলায় কর্মমুখী মানুষ। জেলার প্রবেশপথ ও বিভিন্ন থানা এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে রাখারও অভিযোগ করেছেন সমাবেশে আসা লোকজন। অনেকেই ব্যক্তিগত গাড়ি, ভেঙে ভেঙে বিভিন্ন বাহন ও পায়ে হেঁটে সমাবেশস্থলে আসেন। এদিকে বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাতে আসা লোকজন সমাবেশস্থলেই রাত কাটান। সকাল ৯টার মধ্যে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মাঠ জনসমুদ্রে পরিণত হয়। পথে নানা বাধা পেরিয়ে নেতাকর্মীরা সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাঠে মানুষের বসার জায়গা সংকুলান না হওয়ায় অনেকেই সড়কে ও আশপাশের অলিগলিতে অবস্থান নেন। দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হয়।
ততক্ষণে নগরীর চরপাড়া থেকে মাসকান্দা এলাকা হয়ে বাইপাস রোড পর্যন্ত সড়ক বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের দখলে চলে যায়। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় অনেকেই খরতাপ উপেক্ষা করে পায়ে হেঁটে সমাবেশস্থলে পৌঁছান। জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জের অনেকেই নদীপথে নৌকায় করে সমাবেশস্থলে আসেন। বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক (ময়মনসিংহ বিভাগ) সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স গতকাল দুপুরে মানবজমিনকে বলেন, তারা চেয়েছিল আমাদের সমাবেশ বানচাল করবে। আমরা সেটি হতে দেইনি। বাস বন্ধ করে আমাদের নেতাকর্মীদের আসতে বাধা দেয়া হয়। তবে মানুষের স্রোত এই সরকার কোনোভাবেই আটকে রাখতে পারেনি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পথে পথে বাধা সৃষ্টি করেও ময়মনসিংহের সমাবেশ বানচাল করতে পারেনি। সমাবেশস্থল ও গণপবিরহন বন্ধ করে দেশের মানুষেকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি ও শেখ হাসিনার পতন নিশ্চিত করতেই দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে এসে সমাবেশ সফল করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের সমাবেশের জন্য সরকার গাড়ি বন্ধ করে রেখেছে। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নেতাকর্মীদেরর উপর হামলা করা হয়েছে। বাধা দেয়া হয়েছে। সবকিছু অতিক্রম করে দেশের জনগণ সমাবেশে এসেছেন। আমাদের জনসামাবেশ দেখে আওয়ামী লীগের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।
আমাদের মাত্র ২টি সমাবেশ গেল, এতেই যদি সরকারের এই অবস্থা হয়। আরও ৮টি সমাবেশ আছে তখন তাদের মাথা আরও খারাপ হয়ে যাবে।
এই সমাবেশ প্রমাণ করে দেশের মানুষ আর কোনো বাধা মানবে না: ময়মনসিংহের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের মানুষ এখন জেগে উঠছে। আজকের সব বাধা উপেক্ষা করে এই সমাবেশ প্রমাণ করেছে বাংলাদেশের মানুষ কোনো বাধা মানবে না। তারা অবশ্যই দেশকে মুক্ত করে ছাড়বে ইনশাআল্লাহ্। সকলের প্রচেষ্টায় এই সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবো। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য করবো। জ্বালানি তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি, চলমান আন্দোলনে ভোলায় নূরে আলম ও আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে শাওন, মুন্সীগঞ্জে শহিদুল ইসলাম শাওন ও যশোরে আব্দুল আলিমসহ পাঁচজনকে হত্যার প্রতিবাদে, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি এবং নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে এই গণসমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি।
সমাবেশে ফখরুল বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ কথায় কথায় হুংকার দেয়, ভয় দেখায়। আরে তোমাদের (আওয়ামী লীগ) হুংকারে বাংলাদেশের মানুষ এখন আর ভয় পায় না। বাংলাদেশের মানুষ এখন জেগে উঠেছে। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত যে উত্তাল তরঙ্গ দেখা যাচ্ছে এতে আওয়ামী লীগ ভেসে যাবে। আমাদের জনসমাবেশে যে জনস্রোত নেমেছে। এই জনস্রোতে আওয়ামী লীগকে ভাসিয়ে বিদায় করবো। সেই দিন আর বেশি দূরে নয়। মহাসচিব বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন- দেশ যাবে কোন পথে ফয়সালা হবে রাজপথে। আরেকটি কথা বলেছেন টেক ব্যাক বাংলাদেশ। কেন বলেছেন, কোন বাংলাদেশকে ফিরে পেতে চাই আমরা? যে বাংলাদেশের জন্য স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। তিনি একটি তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে বাংলাদেশকে তুলে নিয়ে এসে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। বাংলাদেশের যারা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেটাকে বাতিল করে তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ আজ বড় বড় কথা বলে।
তারাই গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে বারবার। ৭৫-এ বাকশাল তৈরি করে ধ্বংস করেছে, আবার এখন একনায়কতন্ত্র বাকশাল শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান প্রথম বাংলাদেশে উন্নয়নের ভিত্তি স্থাপন করেছেন। তিনি গার্মেন্টসের সূচনা করেছিলেন। তিনি শ্রমিক ভাইদের বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলেন সেখান থেকে এখন রেমিটেন্স আসছে। এখন ওই রেমিটেন্সের টাকা মেরে খাচ্ছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ এটি একটি ‘চোরের’ দল। এই কথা আওয়ামী লীগের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই বলে গেছেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৯৭৪ সালে তখন আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের কারণে দুর্ভিক্ষ হলো, দুর্ভিক্ষের সময় তিনি ( শেখ মুজিবুর রহমান) বলেছিলেন আমি কী করবো, আমার তো সব চাটার দল, চোরের দল। এতগুলি কম্বল এলো বিদেশ থেকে আমার কম্বলটটা গেল কোথায়। এই হচ্ছে আওয়ামী লীগ। গাইবান্ধা উপ-নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, এটা আমরা আগেই বলেছিলাম। যা গাইবান্ধা উপ-নির্বাচনে আবার প্রমাণিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনোদিন কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।
আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলছি, এই সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন হবে তাদের অধীনে নির্বাচনে জনগণের পার্লামেন্ট গঠন করা হবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। ফখরুল বলেন, অনতিবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে, আমাদের নেতা তারেক রহমানের সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করে তাকে দেশে ফিরে আসার সুযোগ করে দিতে হবে। আমাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে যে মামলা রয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে। সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। তিনি বলেন, মানুষের মুখ বন্ধ করার জন্য সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করলো। যেন মানুষ সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলতে না পারে। শেখ হাসিনা কি গড, দেবতা নাকি ঈশ্বর যে তাকে নিয়ে সমালোচনা করা যাবে না। সমপ্রতি রাজবাড়ীতে আমাদের এক সমাজসেবী বোন নাকি ফেসবুকে শেখ হাসিনার সমালোচনা করেছেন। এজন্য রাতের আঁধারে তাকে ধরে নিয়ে গেল। এসব করে মানুষের মুখ বন্ধ করতে পারবেন না। আজ মানুষের গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ময়মনসিংহের এ সমাবেশের আগে আওয়ামী লীগের সোনার ছেলেরা নাকি আমার রাজনৈতিক সহকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
তারা যে হোটেলে ছিল সেখানে গুলি করেছে। সমাবেশে আসার পথে দেখেছি সোনার ছেলেরা লাঠিসোঁঠা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের নেতাকর্মীদের দেখে তারা লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে।
আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে ভয় পায়: সমাবেশে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে ভয় পায়। এজন্য তারা তাদের অধীনে নির্বাচন করতে চায়। চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহের সমাবেশ দেখে বুঝে ফেলেছে তাদের পরাজয় নিশ্চিত। এজন্যই তারা চায় না দেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। আমরাও এই অবৈধ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবো না। এই সরকারকে পদত্যাগ করতেই হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে। এরপর নির্বাচন কমিশন গঠন হলে আমরা নির্বাচনে যাবো। তিনি বলেন, এই সরকার গুম, হামলা, মামলা করে টিকে থাকতে চাচ্ছে। বিএনপি’র আন্দোলনকে দমন করতে চাচ্ছে। এতো কিছুর পরেও তারা বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। আজকের সমাবেশ তারই প্রমাণ। ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মশিউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেশ আলী মামুন ও শরীফুল আলম প্রমুখ। এর আগে দুপুর ২টায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
সভা শুরুর কয়েক মিনিট পর প্রধান অতিথি হিসেবে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন। সমাবেশের মঞ্চে একটি সুসজ্জিত চেয়ার ফাঁকা রাখা হয় দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সম্মানে। এদিকে সমাবেশকে কেন্দ্র করে নগরীতে ছয় শতাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। জিরো পয়েন্ট, সিজিএম কোর্ট এলাকা, শম্ভুগঞ্জ ব্রিজ মোড়, চরপাড়া মোড়সহ নগরীর প্রবেশ মুখগুলোতে সতর্ক অবস্থানে থাকে পুলিশ।
পথে পথে বাধা, গণপরিবহন বন্ধ: শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলা থেকে ময়মনসিংহের প্রবেশ পথগুলোতে পুলিশি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বাধার মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা। তারা বলেছেন- গণপরিহন বন্ধ করে দেয়া হয়। ব্যক্তিগত কিংবা বিকল্প উপায়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা শহরে প্রবেশ করতে চাইলে বাধা দেয়া হয়। নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা থেকে আসা আবুল হাসেম বলেন, সমাবেশে যোগ দিতে ভোররাতে শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে রওনা দেই। বাস না থাকায় নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। বিভিন্ন বাহনে ভেঙে ভেঙে, আর কখনো পায়ে হেঁটে সমাবেশস্থলে পৌঁছাই। পথে কয়েক জায়গায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাধা দেয়ার চেষ্টা করেছে। তবে আমরা তাদের বাধা অতিক্রম করে মিছিল নিয়ে শহরে পৌঁছাই। কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর থেকে আসা নেতাকর্মীরা বলেছেন, বাস না পেয়ে মাইক্রোবাস নিয়ে এসেছি। পথে কোনো বাধা না পেলেও, ময়মনসিংহের ত্রিশাল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পথ আটকে দিয়েছে। সেখানে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ছিলেন। তাদের হাতে লগি- বৈঠা ছিল। পরে সিএনজিতে করে বিকল্প পথে সমাবেশস্থলে আসি।