দুই পক্ষের জন্যই ম্যাচটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ। জিতলেই ফাইনাল প্রায় নিশ্চিত করবে শ্রীলংকা। অন্যদিকে হারলে টুর্নামেন্ট থেকে ভারতের বিদায় নিশ্চিত। এমন সমীকরণের ম্যাচে উত্তেজনাপূর্ণ লড়াইয়ে শেষ হাসি হেসেছে লংকানরাই।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১৭৩ রান সংগ্রহ করেছিল ভারত। জবাবে ১ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় শ্রীলংকা। দুই ম্যাচে দুই জয়ে লংকানদের চলতি আসরের ফাইনাল প্রায় নিশ্চিত।
অন্যদিকে খাতাকলমে বিদায় না হলেও ভারতের বিদায়ও প্রায় নিশ্চিত। আগামীকাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে পাকিস্তান জিতলেই রোহিত শর্মার দলের বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাবে। তবে আফগানরা জিতলে নানা হিসাব-নিকাশের মুখোমুখি হবে তাদের।
শেষ দুই ওভারে শ্রীলংকার প্রয়োজন ছিল ২১ রান। ভুবনেশ্বর কুমারের পেনাল্টিমেট ওভারে ১৪ রান যোগ করেন ভানুকা রাজাপাকশে ও দাসুন শানাকা। শেষ ওভারে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৭ রান।
আর্শদীপের করা শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে দুই রান নেন ভানুকা-শানাকা। তৃতীয় বলে আসে ২ রান। পরের বলে আরো এক রান আসলে শেষ দুই বলে প্রয়োজন দাঁড়ায় ২ রান। এমন অবস্থায় পঞ্চম বলে ২ রান নিয়ে শ্রীলংকাকে জয় এনে দেন শানাকা।
শ্রীলংকার হয়ে রান তাড়া করতে নামেন কুশল মেন্ডিস ও পাথুম নিশাংকা। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন দুজন। প্রথম পাওয়ার প্লে-তে তারা যোগ করেন ৫৭ রান। উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৫৭ রান। এরই মাঝে অর্ধশতক পূরণ করেন নিশাংকা।
ম্যাচ যখন শ্রীলংকার হাতের মুঠোয়, এমন সময়ে জোড়া আঘাত হানেন যুবেন্দ্র চাহাল। একই ওভারে তিনি ফেরান নিশাংকা ও চারিথ আসালাঙ্কাকে। সাজঘরে ফেরার আগে নিশাংকা ৫২ রান করলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি আসালাঙ্কা।
কুশল মেন্ডিস ও দানুশকা গুনাথিলাকাও দ্রুত ফিরলে ম্যাচ হেলে পড়ে ভারতের দিকে। আউট হওয়ার আগে অর্ধশতকের স্বাদ পান মেন্ডিস। তিনি ৫৭ ও গুনাথিলাকা ১ রান করেন। এমন সময় লংকানদের প্রয়োজন ছিল ৩৫ বলে ৬৪ রান।
সেখান থেকে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান রাজাপাকশে ও শানাকা। শেষ পর্যন্ত তারা অপরাজিত থাকেন যথাক্রমে ২৫ ও ৩৩ রানে। ভারতের হয়ে চাহাল তিনটি ও অশ্বিন একটি উইকেট নেন।
এর আগে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলংকা অধিনায়ক দাসুন শানাকা। ভারত এই ম্যাচ হারলে এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে যাবে। অন্যদিকে শ্রীলংকা জিতলে তাদের ফাইনাল খেলা অনেকটাই নিশ্চিত হবে। এমন ম্যাচে ভারতের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে রোহিত শর্মার সঙ্গে নামেন কেএল রাহুল।
এ ম্যাচেও অফ ফর্ম থেকে বেরোতে পারেননি রাহুল। মহেশ থিকসানার প্রথম ওভারেই লেগ বিফোরের শিকার হন তিনি। এর আগে করেন ৬ রান। শেষ ৩ ম্যাচেই টানা রান করে ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। কিন্তু এদিন তাকে রানের খাতাই খুলতে দেননি দিলশান মাধুশানাকা।
৪ বল খেলে ডাক মারেন কোহলি। শুরুতেই দুই উইকেট হারানোর পর সূর্যকুমার যাদবকে সঙ্গে নিয়ে বড় জুটি গড়েন রোহিত। ত্রয়োদশ ওভারে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে ৯৭ রান যোগ করেন তারা। এ সময় ৪১ বলে ৭২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন রোহিত।
সূর্যকুমার এদিন ৩৪ রান করে আউট হন। হার্দিক পান্ডিয়াও ১৭ রানের বেশি করতে পারেননি। দুজনকেই সাজঘরে ফেরান লংকান অধিনায়ক শানাকা। দীপক হুদাকেও প্রথম বলেই আউট করেছিলেন তিনি। তবে ওভারে অতিরিক্ত বাউন্স দেওয়ায় সেটি নো বল হয়।
অবশ্য জীবন পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি হুদা। মাত্র ৩ রান করে মাধুশানাকার বলে বোল্ড হন তিনি। একই ওভারে ১৭ রান করা রিশাভ পান্টকেও ফেরান এই পেসার।
শেষদিকে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ১৫ রানের ক্যামিওতে ভারতের বড় সংগ্রহ নিশ্চিত হয়। শ্রীলংকার হয়ে মাধুশানাকা তিনটি, চামিকা করুণারত্নে ও শানাকা দুটি এবং মহেশ থিকসানা একটি করে উইকেট শিকার করেন।