ওপেনিং জুটি কেন ক্লিক করছে না? এই প্রশ্নের উত্তর বাংলার ক্রিকেটে যেন বড় রহস্য। যাকে এই সমুদ্রে নামিয়ে দেওয়া হয়, সেই নাবিকই খেই হারান। কিন্তু কেন?
হিসেব বলছে গত এক বছরে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে ২৫ ইনিংসে বাংলাদেশের কেবল একটি ওপেনিং জুটি ছুঁতে পেরেছে পঞ্চাশ রানের ঘর। সবশেষ ১৩ ইনিংসের নয়টিতে ওপেনিং জুটি ভেঙেছে দুই অঙ্কের ঘর ছোঁয়ার আগে!
পাওয়ার প্লেতেও বেশ কাবু বাংলার ওপেনাররা। শুরু হওয়ার আগেই যেন সব শেষ! বাংলাদেশের ওপেনারদের ঝড় তোলার ঘটনা বিরল প্রায়। গেল ২৩ ইনিংসে কোনো ওপেনিং জুটিই প্রথম ৬ ওভার পার করতে পারেনি।
এশিয়া কাপেও ব্যতিক্রম কিছু ঘটেনি। আফগানদের বিপক্ষের ম্যাচে ওপেনাররা রীতিমতো হতাশ করেছেন। এনামুল হক বিজয় ও মোহাম্মদ নাঈম শেখ, দুজনে ব্যাটে বল লাগাতেই ব্যর্থ। একজন করেছেন ৬ রান আরেকজন ৪। তবে ওপেনিং জুটি ১০ রানও তুলতে পারেনি।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দুর্দান্ত মৌসুম কাটালেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে আবারও ছন্নছাড়া বিজয়। ফেরার পর টি-টোয়েন্টি সংস্করণে ৭ ম্যাচে ১২.৮০ গড়ে করেছেন মোটে ৯০ রান। স্ট্রাইক রেট কেবল ৯৫.৭৪! নাঈম শেখও বরাবরের মতো মন্থর এবং হাল ধরতে ব্যর্থ। উন্নতির কোন লক্ষ্মণ তার খেলায় নেই। সবশেষ অর্জন ওয়ানডে ফরম্যাটে এ দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে সেঞ্চুরি!
এবার শোনা যাচ্ছে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওপেনিংয়ের জন্য মেহেদী মিরাজ আর সাব্বির রহমানকে ভাবা হচ্ছে! এই ভাবনাও বিস্ময়কর। কারণ ২০১৯ সালে দল থেকে বাদ পড়ারর পর সাব্বির রহমানও চোখে পড়ার মতো কোন ইনিংস খেলতে পারেননি।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তিনে খেলে সাব্বির ২৭ ম্যাচে ৭২৪ রান করেছেন। সর্বোচ্চ ৮০। ২৮ ছক্কার ২৩টিই এই পজিশনে।
আর মিরাজকে ওপেনিংয়ে দেখা গেলে, তার যোগ্যতা নাকি ঢাকার দুই প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো করা।
খালেদ মাহমুদ সুজনও বলেছেন ‘ওপেনিংয়ে হতেও পারে কালকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। বলা যায় না। আমাদের ব্যাটিংয়ের উন্নতিটা খুব প্রয়োজন। আমাদের টপ অর্ডারে সবচেয়ে বড় সমস্যা, উদ্বোধনী জুটি ক্লিক করছে না কোনোভাবেই। আমরা অনেক জুটিকেই চেষ্টা করেছি। লিটন দাসকে খুব মিস করছি এই টুর্নামেন্টে। আশা করি, যারাই খেলবে ওপেনিংয়ে, তাদের যে পরিকল্পনা থাকবে, সেটা অনুযায়ী ব্যাট করবে।’
টিম মিটিংয়েও নাকি গতকাল বুধবার সাব্বির-মিরাজকে ওপেনিংয়ে খেলানোর ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কী আছে, তা দেখতে টসের আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।