পৃথিবীতে আল্লাহ মানুষকে অসংখ্য নিয়ামত দান করেছেন। যেগুলো যথাযথ নিয়মে ভোগ করা মানুষের কর্তব্য। কারণ এর মাধ্যমে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা হয়। আর যদি কেউ নিয়ামতগুলো সঠিক পদ্ধতিতে ব্যবহার না করে তাহলে তার থেকে আল্লাহ নিয়ামত সংকুচিত করে দেবেন। যার ফলে মানুষকে বিপদে পতিত হতে হবে। তাই পৃথিবীতে আল্লাহ আমাদের জীবনোপকরণস্বরূপ যেসব নিয়ামত দান করেছেন তার পরিপূর্ণ হক আদায় করা। পরিমিতভাবে সব ব্যবহার করা। কোনো সম্পদ অপচয় না করা। কারণ বান্দা যখন আল্লাহর নিয়ামতগুলোর অপচয় করবে তখন আল্লাহ তার নিয়ামত উঠিয়ে নেবেন। আর যদি নিয়ামত অপচয় না করে তাহলে আল্লাহ তার নিয়ামত বৃদ্ধি করে দেবেন। এ প্রসঙ্গে কোরআনে এসেছে, ‘তোমরা যদি (আমার নিয়ামতের) কৃতজ্ঞতা আদায় কর তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের আরও বাড়িয়ে দেব, আর যদি অকৃতজ্ঞ হও তাহলে (জেনে রেখ) আমার শাস্তি অবশ্যই অত্যন্ত কঠিন।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত ৭)
যারা সম্পদ অপচয় করে কোরআনে তাদের শয়তানের ভাই বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছে, ‘আত্মীয়কে তার প্রাপ্য দিয়ে দাও এবং মিসকিন ও মুসাফিরকেও; তবে কিছুতেই অপচয় কোরো না। সন্দেহ নেই, যারা অপচয় করে তারা শয়তানের ভাই, আর শয়তান তার প্রভুর প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত ২৬-২৭)
যারা অপচয় করে আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন না। এ প্রসঙ্গে কোরআনে এসেছে, ‘তোমরা এগুলোর ফল খাও যখন তা ফলবন্ত হয় এবং এগুলোর হক আদায় কর ফসল কাটার দিন। আর তোমরা অপচয় কোরো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অপচয়কারীদের ভালোবাসেন না।’ (সুরা আনআম, আয়াত ১৪১)
পৃথিবীতে যারা ভোগবিলাস এবং সম্পদ অপচয় করবে তাদের জন্য পরকালে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। এ প্রসঙ্গে কোরআনে এসেছে, ‘আর বাঁ পাশের দল কতই না হতভাগ্য তারা! তারা থাকবে উত্তপ্ত বায়ু ও ফুটন্ত পানির মধ্যে। যা শীতল নয় বা আরামদায়ক নয়। ইতোপূর্বে তারা ছিল ভোগবিলাসে মত্ত।’ (সুরা ওয়াকিয়া, আয়াত ৪১-৪৫)
সম্পদ ব্যয়ের ক্ষেত্রে মধ্যম পন্থা অবলম্বনের কথা বলা হয়েছে। যারা এমনটি করবে আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন। এ প্রসঙ্গে কোরআনে এসেছে, ‘আল্লাহ তাদের পছন্দ করেন যারা ব্যয় করার ক্ষেত্রে মধ্যবর্তিতা অবলম্বন করে, প্রয়োজনের থেকে বেশি ব্যয় করে না এবং কমও করে না।’ (সুরা ফুরকান, আয়াত ৬৭)