কক্সবাজারের উখিয়ার টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে পালানোর সময় ১৩৬ রোহিঙ্গাকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (৪ এপ্রিল) সকালে তাদের আটক করা হয়।
জানা যায়, আটক রোহিঙ্গারা ভারত-মালয়েশিয়াসহ আশপাশের দেশগুলোতে পাড়ি জমানোর উদ্দেশ্যে ক্যাম্প থেকে বের হয়।
সম্প্রতি মালয়েশিয়া যাত্রাকালে র্যাবের হাতে ধরা পড়া ১২ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা আরকান বিবি বলেন, ‘আমার ভাই জুবাইর মালয়েশিয়া থাকে। আমাকে সেখানে বিয়ে দেয়ার জন্য দালালের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু দালালরা সমুদ্রের মাঝ পথে নিয়ে আমাদের জিম্মি করে টাকা আদায় করে। পরে র্যাব আমাদের উদ্ধার করে।’
কক্সবাজার রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘২০১৭ সালে রোহিঙ্গা আসার পর থেকে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে দফায় দফায় মিটিং হলেও কোনো সিদ্ধান্ত বা সুরহা হয়নি। এরই মাঝে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়ে গেছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খুন হচ্ছে। যে কারণে অনেক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে পালিয়ে যাচ্ছে। আবার অনেকে পরিবারের জনসংখ্যা বেশি হওয়ায় কিছু সদস্য অন্যত্রে ঘরবাড়ি করার জন্য ক্যাম্প ছাড়ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গারা শুধু বিদেশ যাচ্ছে তা না। তারা চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও কক্সবাজারের পার্বত্য এলাকায় পালিয়ে গিয়ে ঘরবাড়ি করছে। এদেশের মানুষের সাথে মিশে ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।’
কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, ‘জেলের মধ্যে কয়েদিদের পোলাও-বিরিয়ানি দিলেও যেমন অশান্তি বিরাজ করে, ঠিক তেমনি রোহিঙ্গাদের রেশন সামগ্রী বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিলেও তারা আবদ্ধ জীবন থেকে রেহাই পেতে অন্যত্রে পাড়ি জমাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যাওয়ার আরেকটি কারণ হলো ক্যাম্পে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঠিক তৎপরতা না থাকা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কঠোর নজরদারি এড়িয়ে বা তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিভাবে তারা ক্যাম্পের বাইরে যেতে পারছে।’
এ ব্যাপারে ক্যাম্পে কর্মরত ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক পুলিশ সুপার নাইমুল হকের বক্তব্য নেয়ার জন্য মুঠোফোনে কল দেয়া হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমদ সনজুর মোরশেদ বলেন, ‘রোহিঙ্গারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে নানা কৌশলে ক্যাম্প থেকে বের হচ্ছে। এমন অভিযোগ পেয়ে উখিয়া উপজেলার কয়েকটি বাজারে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’