ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ফরিদপুরে পদ্মা নদীর পানি গত ৫ দিন ধরে বেড়েই চলেছে। ফলে দেশের মধ্যাঞ্চলের এই জেলার নিম্নাঞ্চলে প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। জেলার চারটি উপজেলার শতাধিক গ্রামের ২৫ হাজার পরিবার এখন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ফরিদপুর পাউবো অফিস জানিয়েছে, পদ্মায় গোয়ালন্দ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৭ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে তা এখন বিপৎসীমার ৪১ সে.মি মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা সদর, চরভদ্রাসন, সদরপুর ও ভাঙ্গা উপজেলার শতাধিক গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। তলিয়ে গেছে বেশ কয়েকটি সড়ক।
ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল, ডিক্রিরচর ও চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ডিক্রিরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টু জানান, তার ইউনিয়নের ১২টি গ্রাম বন্যাকবলিত। আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা আছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে মানুষের আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হবে।
নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান জানান, তার ইউনিয়নের ১৪টি গ্রামের ১৩ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে।
ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম রেজা বলেন, পানিবন্দি মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য ও গবাদি পশুর খাদ্য মজুদ আছে। আশ্রয়কেন্দ্রে বন্যা দুর্গতদের নিরাপদ স্থানে রাখার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেন মোল্যা জানান, উপজেলার ঝাউকান্দা, হরিরামপুর, চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নের ২৭টি গ্রামের ১৫ হাজার পরিবার এখন পানিবন্দি। তিনি জানান, উপজেলার চার ইউনিয়নের তিনটি পদ্মা নদীর চরাঞ্চলে।
সদরপুরের তিনটি ইউনিয়ন দিয়ারানারকেল বাড়িয়া, চরনাছিরপুর ও চরমাইরের ১৫টি গ্রামে ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী শফিকুর রহমান জানান, পানিবন্দি মানুষের নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখছেন। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তিনি আশা করছেন, দ্রুতই সমস্যাগ্রস্ত মানুষের পাশে সরকারি সহায়তা নিয়ে যেতে পারবেন।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার পানিবন্দি মানুষের বিষয়ে বলেন, জেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষের খবর রাখছেন। সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাদের সরকারিভাবে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে সদর উপজেলার কিছু জায়গায় খাদ্য সহায়তা দেওয়া শুরু করা হয়েছে।