দেশে করোনাভাইরাসের উর্ধবগতিতে বারবার পেছাচ্ছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কয়েক দফা পিছিয়েছে, ২০ গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা, সাত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে। পেছালো বুয়েট, ডেন্টালসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা।
এর মধ্যে আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে এসএসসি এইচএসসি পরীক্ষা শুরু করার কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী। আগের ব্যাচ ভর্তিই হতে পারেনি। এর মধ্যে আরেকটি ব্যাচ তৈরি হচ্ছে। সবমিলিয়ে চরম হতাশায় শিক্ষার্থীরা।
করোনাকাল পুরো শিক্ষাব্যবস্থায় চরম আঘাত করেছে। অনলাইন ক্লাস হয়তো চলছে। কিন্তু সেই শিক্ষা পদ্ধতির সঙ্গে কতজন অভ্যস্থ? তাছাড়া সবাই এই ব্যবস্থাপণায় অংশও নিতে পারছে না, নানাবিদ জটিলতায়। পরীক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুÑসবার মধ্যেই স্পষ্ঠত একধরনের হতাশা। তারা বলছেন এভাবে আর কতদিন। প্রস্তুতির জন্য একটা ফোকাস থাকা দরকার। সেটা কতদিন ধরে রাখা যায়। ইতোমধ্যে একটি শিক্ষাবর্ষ শেষ। আরেকটি শিক্ষাবর্ষ আসছে। এভাবে আর কতদিন বসে থাকতে হবে জানা নেই।
হামিদুর রহমান পিয়াল নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তি পরীক্ষা জন্য বসে না থেকে আমাদের রেজাল্টের ভিত্তিতে ভর্তি নিতে পারতো। আমাদের আবেদনের পর তারা যেভাবে প্রাথমিক বাছাই করেছে সেভাবে ভর্তির জন্যও সিলেক্ট করতে পারতো। এতে তুলনামূলক মেধাবীরাই সুযোগ পেত।
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এইচএসসির পর ২-৩ মাসের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। সেখানে ১ বছর চলে গেছে। পড়ার জন্য একটা ধারাবাহিকতা থাকা দরকার। সেটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
শারমিন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, গত ঈদেও দাদা দাদির কাছে যাইনি। কখন পরীক্ষা শুরু হয়ে যায়, সেই অপেক্ষায় ছিলাম। এখনো সে অনিশ্চয়তায় আছি। এভাবে আর কতদিন বসে থাকতে হবে জানি না। এখন আর পড়তেও ইচ্ছে করে না। সামনে কি হবে সেটা নিয়েই অনিশ্চয়তা।
দেশে ৪৬টি স্বায়ত্তশাসিত ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক কার্যক্রম চালু রয়েছে। এরমধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় ও ৪টি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া বাকি ৩৯টিতে সরাসরি ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে থাকে।
এবার তিন গুচ্ছে ২৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা হবে। আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বাদে বাকিগুলোতে সরাসরি ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি নেবে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেলে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ ঠিক করে উপাচার্যদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ। কিন্তু করেনা সংক্রমণের হার উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষা নেওয়া যাচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, দেশে করোনা মহামারি চলছে গত বছর থেকে। আমরা আগেই বলে দিয়েছিলাম যে, করোনা পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে আসার পর আমরা সশরীরে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করবো।