গলাচিপা ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে নদী। ফলে বাড়ছে নদী ভাঙ্গন। নদীতে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি, বসতভিটা। গৃহহীন হচ্ছে নদীপাড়ের বাসিন্দারা। বন্ধ হয়ে গেছে এলাকার জেলেদের জীবিকা। ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে চলাচলের রাস্তা-কালভার্টসহ সংরক্ষিত বনাঞ্চল। পটুয়াখালীর বুড়া গৌড়াঙ্গ ও রাবনাবাদ নদী থেকে প্রভাবশালীদের প্রতিনিয়ত অবৈধ বালু উত্তোলনে এভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে গলাচিপা, কলাপাড়া ও রাংগাবালীর নদী ও নদীপাড়ের পরিবেশ ও জীবন-জীবিকা। দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালীদের এমন ক্ষতির মুখে থাকলেও ভয়ে এনিয়ে প্রতিবাদ করতে পারছেনা ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। সরজমিনে দেখা যায়, পটুয়াখালীর গলাচিপা ও রাংগাবালী উপজেলার বুড়া গৌরাঙ্গ নদী এবং কলাপাড়া উপজেলার রাবনাবাদ নদী থেকে প্রতিদিন অন্তত: কুড়িটি ড্রেজার অব্যাহতভাবে বালু উত্তোলন করছে। খান ট্রেডার্সসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের সাথে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রতিদিন বালু উত্তোলন করছে। এতে চরম ঝুঁকির মুখে পড়েছে নদী ভাঙ্গন কবলিত গলাচিপার পানপট্টি, চর কাজল, রাংগাবালীর ছোটবাইশদিয়া ও কলাপাড়ার ধুলাসর এলাকার নদীপাড়ের বসতভিটা, ফসলি জমি। ভাঙ্গন ঝুঁকিতে পড়ছে চলাচলের রাস্তা-কালভাটসহ বন বিভাগের নদী তীরের ম্যানগ্রোভ প্রজাতির সংরক্ষিত বনাঞ্চল। বন্ধ হয়ে গেছে জেলেদের মাছ ধরা। গলাচিপা পানপট্টি এলাকার বাসিন্দা আবুল কাশেম, শাহাবুদ্দিন, মাহফুজা বেগম দেশ প্রতিবেদকে বলেন, নদী হতে সনাতনী পদ্ধতিতে বালু উত্তোলনের ফলে কয়েক যুগ ধরে নদী ভাংগন কবলিত এই এলাকায় হঠাৎ করে বেড়ে গেছে নদী ভাংগন। নদীপাড়ের ফসলি জমি, রাস্তাঘাট ভেঙ্গে যাচ্ছে। দিনরাত ড্রেজারের মেশিনের শব্দে নস্ট হচ্ছে পরিবেশ। কঠোর আইনী সুরক্ষায় দ্রুত বালু উত্তোলন বন্ধ করে নদী পাড়ের মানুষের জীবিকা-সম্পদ রক্ষা করবে প্রশাসন। এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করে কালাম, সৈয়দসহ বেশ কয়েকজন জেলে প্রতিবেদককে জানান, বুড়া গৌরাঙ্গ, আগুনমুখা ও রাবনাবাদ নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছি। বালু উত্তোলনকারীদের লোড, আনলোড ড্রেজারের কারনে এখন বন্ধ হয়ে গেছে জেলেদের মাছ ধরা। এনিয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে হুমকী-ধামকির মুখোমুখি হয়েছি। গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশীষ কুমার প্রতিবেদককে বলেন, কোন প্রভাবশালীর অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার কোন সুযোগ নেই তথ্য পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী প্রতিবেদকে বলেন, নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীরা সারা দেশেই সক্রিয়। এদের বিরুদ্ধে প্রশাসন সক্রিয় রয়েছে। আইনী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এখানকার বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধেও কঠোর আইনী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।