রাজশাহীতে এন আই এ্যাক্টের ১৩৮ ধারার সুযোগ নিয়ে চেকের মামলার নামে বাড়ছে প্রতারণা। সেই সাথে বাড়ছে ফাকা চেক লেনদেন ও বেচা কেনা। এমনই মামলার স্বীকার হয়েছেন মহানগরীর পদ্মা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা হেদায়েত উল্লাহ নামের ৭০ বছরের বৃদ্ধ। গত ২১ মার্চ ২০২৪ইং তারিখ থেকে ৩০ জুন ২০২৪ইং তারিখের মধ্যে তার বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাজশাহী মহানগরীর পেন্টামারী, ভদ্রা এলাকার মাসুদ রানা (সুইট) রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বোয়ালিয়া থান আমলী আদালতে এ মামলা গুলো দায়ের করেন। একই ব্যাংকের ভিন্ন ভিন্ন ১৩টি চেকে প্রায় ২,৩২,৪০,০০০/-(দুই কোটি বত্রিশ লক্ষ চল্লিশ হাজার) টাকার মামলা দায়ের করেন তিনি। এ ছাড়াও হেদায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় দন্ডবিধি আইনের ৪০৬,৪২০ ও ৫০৬ ধারায় আরো একটি মামলা দায়ের করেন উক্ত মাসুদ রানা (সুইট)। খবর নিয়ে জানা যায় মামলার বাদী মাসুদ রানা (সুইট) নিজেকে ব্যাংক এশিয়া রাজশাহী শাখার লোন প্রসেসিং অফিসার পরিচয় দিয়ে হেদায়েত উল্লাহর সাথে স্বক্ষতা গড়ে তোলেন। পরবর্তিতে ব্যবসার জন্য হেদায়েত উল্লাহকে লোন করে দেয়ার কথা বলে আনুমানিক ১১০টি চেকের পাতা, হেদায়েত উল্লাহর প্রতিষ্ঠানের নামে ৩০০ টাকার নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প ও প্রতিষ্ঠানের প্যাডের পাতা নেন। লোনের জন্য দীর্ঘ দিন ঘোরার পর না পেয়ে গত ১৮ জানুয়ারী ২০২৪ইং তারিখে হেদায়েত উল্লাহ তার চেক ও অন্যান্য কাগজাদী ফেরত চান। চেক ও যাবতীয় কাগজ হারিয়ে গেছে বলে মাসুদ রানা (সুইট) দাবী করে ১০০টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ঘোষণা দেন। পরবর্তিতে সেগুলো খুঁজে পেলে ফেরত দিবেন অথবা এগুলো দিয়ে কোন মিথ্যা মামলা করবেন না বা হেদায়েত উল্লাহকে কোন প্রকার বিপদে ফেলবেন না। এ ছাড়াও ওই স্ট্যাম্পে তাদের মধ্যে ব্যবসায়ীক লেনদেন ও দেনা-পাওনা পরিশোধ সংক্রান্ত ঘোষণাও দেন মাসুদ রানা (সুইট)। এর ২ মাস পার হতে না হতেই হারানো চেক গুলো দিয়ে হেদায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে একের পর এক ১৩টি মামলা দায়ের করেন মাসুদ রানা (সুইট)। গত ২৫ জুলাই ২০২৪ইং তারিখে আদালতে হাজির হয়ে ১৩টি মামলার জামিন নেন হেদায়েত উল্লাহ। উক্ত মামলা সম্পর্কে হেদায়েত উল্লাহর আইনজীবী এডভোকেট ফারুক আহমেদ বলেন, বৃদ্ধ হেদায়েত উল্লাহকে লোন পাইয়ে দেয়ার কথা বলে চেক, ৩০০টাকার ফাঁকা স্ট্যাম্প ও তার প্রতিষ্ঠানের প্যাডের পাতা নেন। হারিয়ে গেছে বলে সেটা দিয়েই এন আই এ্যাক্টের ১৩৮ ধারায় আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে একের পর এক ১৩টি মামলা করেন। এটা নি: সান্দেহে আইনের অপব্যবহার। আমরা এবিষয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। আশা করছি হেদায়েত উল্লাহ ন্যায় বিচার পাবে। এ বিষয়ে মামলার বাদী মাসুদ রানা সুইট এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন টাকা পাবো বলেই আদালতে মামলা করেছি। ১৩টি মামলায় মোট কত টাকার মামলা করেছেন এ বিষয়ে তিনি বলতে পারবেন না বলে জানান। উল্লেখ্য, মাসুদ রানা সুইট নিজেকে সংবাদ পত্রের প্রকাশক দাবী করেন।