দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফসার আলী’র দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। গতকাল বুধবার ২১আগষ্ট দুপুরে বোচাগন্জ আমলি আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক জয় কিশোর নাগ দুই দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। দিনাজপুর কোর্ট ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী রিমান্ডের সংবাদ নিশ্চিত করে জানান পুলিশ আফসার আলী বিরুদ্ধে আদালতে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। বিচারক শুনানি শেষে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত শনিবার বোচাগঞ্জ থানায় বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের পক্ষে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফয়সাল মোস্তাক বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সেতাবগঞ্জ সরকারি কলেজ হতে শিক্ষার্থীরা একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করে। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান আফসার আলীর নির্দেশে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী মিছিলে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ অতর্কিত হামলা চালায়। পিটিয়ে গুরুতর আহত করে, গুম করে ফেলার হুমকি দেয় এবং মেয়েদের শ্লীলতাহানি ঘটায়। তাদের হুমকি ধামকিতে এলাকার কোন চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে চিকিৎসা পর্যন্ত নিতে পারেন নি শিক্ষার্থীরা। এ মামলায় সাবেক নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও দিনাজপুর- ২ আসনের সংসদ সদস্য খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব আহমাদুল বাশারসহ ২৪ জন এজাহার নামীয় আসামী ও অজ্ঞাত ৭০-৭৫ জনকে আসামি করা হয়। গত, ৫ আগস্টের পর থেকে স্বপরিবারে আত্মগোপনে ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফসার আলী। শনিবার সন্ধ্যার কিছু সময় আগে স্ত্রী-সন্তানকে সাথে নিয়ে থানায় আসে বাড়ি ভাঙচুরের মামলা করতে আসেন। এ সময় বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতেই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যেকটি মামলায় নিরপেক্ষ তদন্ত করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন এটা আওয়ামীলীগের দেশ না, এটা স্বাধীন বাংলাদেশ। শিক্ষার্থীদের মুখে এমন কথা শুনে তাদের উপরে চড়াও হন আফসার আলী, হুমকি দেন শিক্ষার্থীদের। মূহুর্তে শিক্ষার্থীরা শ্লোগান দেওয়া শুরু করলে বাইরে থেকে আরও কিছু শিক্ষার্থীও সাধারণ মানুষ উপস্থিত হয়ে চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি তুলেন। পরে হ্যান্ডমাইক হাতে নিয়ে মৌখিক পদত্যাগের ঘোষনা দেন এবং সাত দিনের মধ্যে লিখিতভাবে পদত্যাগ করবেন বলেও জানান। এসময় বোচাগঞ্জ উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে দায়িত্বপালনকারী সেনাবাহিনীর সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষার্থীদের দায়ের করা মামলায় চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করে শনিবার রাত সাড়ে এগারোটায় আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।