খাগড়াছড়িতে গত পাঁচ দিনের টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। জেলা সদরের শব্দমিয়া পাড়া, মুসলিম পাড়া, শান্তিনগর, ফুট ভিল, মেহেদী বাগসহ নিচু এলাকার কয়েকশ ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়াও জেলার দীঘিনালা উপজেলার কবাখালি, মেরুং ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার লোক। আকস্মিক বন্যায় জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দং, তবলছড়ি এবং বর্ণাল ইউনিয়নের ফেনী নদীর পারের ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তলিয়ে গেছে আমন ধানের মাঠ। অতিরিক্ত পানিতে পুকুর তলিয়ে এবং পার ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মাছ চাষিরা। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সরজমিনে দেখা গেছে জেলার পানছড়ির চেঙ্গি ইউনিয়নের চেঙ্গি নদীর দুই পাশের ঘরবাড়িসহ ফসলি জমি ডুবে গেছে। মহালছড়ির উপজেলার ২৪ মাইল এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে রয়েছে। এ ছাড়াও অতিভারী বৃষ্টির কারণে জেলার কয়েকটি স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে কোথাও বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। খাগড়াছড়ি সদরের শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা মো. ইসরাফিল জানান, মঙ্গলবার ৩টার দিকে হঠাৎ করে পানি বাড়তে থাকে এবং ঘরে প্রবেশ করা শুরু করে। বর্তমানে ঘরের ভেতর হাঁটু পানি হয়ে গেছে। ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় পানির চাপ রয়েছে এবং পানি বাড়ছে। শব্দ মিয়া পাড়ার একাধিক বাসিন্দা জানান, দুপুরের পর থেকে পানি বেড়ে চলছে। এলাকাটির অধিকাংশ ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। চলতি মাসে কয়েকদিনের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার বন্যা হওয়ায় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আকস্মিক পানি বেড়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ। খাগড়াছড়ি পৌরসভার কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র মো. শাহআলম বলেন, খাগড়াছড়ি পৌর এলাকায় ১৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যাকবলিত বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের সহায়তা করা হবে। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে জানান, দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন কাজ করছে। জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলার বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোতে ৯৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ইতোমধ্যে দুর্গতদের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জেলায় ৫০০ মেট্রিকটন খাদ্যশস্য বরাদ্দ করা হয়েছে।