দেশের টাকা যারা পাচার করেছেন, তাদের শান্তিতে ঘুমাতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নবনিযুক্ত গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, তাদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করা না গেলেও আইনের ভিত্তিতে দৌঁড়ের ওপর রাখা হবে।
গভর্নরের দায়িত্ব নেয়ার পর আজ বুধবার কেন্দ্রিয় ব্যাংকের সভাকক্ষে আহসান এইচ মনসুর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
গভর্নর বলেন, ব্যাংক খাতে এখন যে খারাপ অবস্থা, তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকও দায়ী। এখন দেখার বিষয়, কেন তারা অনিয়মে সহায়তা করেছেন। মনে রাখতে হবে, সামগ্রিকভাবে জাতিগত পতনের সঙ্গে ব্যাংক খাতের এই দুরবস্থা তৈরি হয়েছে।
মূল্যস্ফীতিকে বর্তমানের মূল চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘এটা কমে আসবে। তবে আজই কমবে, তা নয়; কীভাবে তা কমিয়ে আনা যায়, সে ব্যবস্থা নেয়া হবে। রিজার্ভ বাড়ানো ও মূল্যস্ফীতি কমাতে কাজ করা হবে।’
গভর্নর বলেন, অর্থ পাচার ঠেকাতে সরকারের সঙ্গে মিলে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নেতৃত্ব নিয়ে আগে কখনো প্রশ্ন ওঠেনি; সম্প্রতি দু’একজনকে নিয়ে কথা হয়েছে, এটা দুঃখজনক।
এর আগে সচিবালয়ে এক পর্যালোচনা বৈঠকশেষে নবনিযুক্ত গভর্নর সাংবাদিকদের বলেন, আগামী পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে বলে আশা করছি। তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি কমানো, চাঁদাবাজি কমিয়ে আনা এবং উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হলে ধীরে ধীরে পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতিকে আমরা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে পারবো। এটাই আমরা আশা করছি। এজন্য আমাদের কাজ করতে হবে, সময় দিতে হবে।
দেশের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অগ্রাধিকার হবে জানিয়ে তিনি বলেন, বাজারে তিনটা অ্যাঙ্গেলে কাজ করার সম্ভাবনা আছে। একটি হলো, সরবরাহ ব্যবস্থা। অর্থাৎ কীভাবে উৎপাদন বাড়িয়ে আমরা সরবরাহ বাড়াতে পারি এবং তার মাধ্যমে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব আনা যায়। দ্বিতীয়ত, চাঁদাবাজির মতো কিছু বিষয় উঠে এসেছে। এই জায়গাগুলোতে কাজ করতে হবে। তৃতীয়ত, চাহিদার দিক নিয়ে কাজ করা। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক এই কাজটা করছে। আমরা আরেকটু পর্যালোচনা করে দেখব আরও কিছু করার আছে কিনা।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি আছে, এটা অস্বীকার করে লাভ নেই। এজন্য আমরা যতটুকু আমদানি করতে পারতাম, ততটুকু পারছি না। সেটার একটা প্রভাব তো বাজারে থাকবেই।