বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, ‘ভারত সরকার বাংলাদেশের হিন্দুদের উসকে দিচ্ছে। তাঁদের রাস্তায় নামিয়ে এনেছে। হিন্দুরা আমাদের ভাই। বুক পেতে তাঁদের আমরা রক্ষা করব। তাঁদের ভয়ের কোনো কারণ নেই।’
ভোলার লালমোহনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের স্মরণ এবং শেখ হাসিনার গুম, খুন, মিথ্যা মামলা ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। লালমোহনের হাফিজ উদ্দিন অ্যাভিনিউয়ে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ২০০১ সালে লর্ড হার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের কিছু বখাটে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন করেছিল। তখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় ছিল। তারপরও ওসিকে আসামিদের আটক করতে বলেন তিনি। দ্রুত বিচার আইনে বিচার করে ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ অপরাধীদের শাস্তি হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের লোকজন সারা পৃথিবীকে জানায়, মেজর হাফিজ হিন্দুদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছে। সুতরাং এই নিকৃষ্ট দল আওয়ামী লীগ থেকে সাবধান থাকবেন।
শেখ হাসিনার উদ্দেশে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘ইয়েমেনের অত্যাচারী বাদশাহ আবরাহাকে আল্লাহ আবাবিল পাখি পাঠিয়ে যেমন ধ্বংস করেছেন, তেমনি বাংলাদেশের তরুণ ছাত্রসমাজ ও বিভিন্ন পেশাজীবী জনতা দিয়ে স্বৈরাচারী সরকার ও কুখ্যাত আওয়ামী লীগকে উচিত শিক্ষা দিয়েছে। আজকে উপলব্ধি হয়েছে নিরস্ত্র ছাত্ররাই বড় যোদ্ধা।’
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তাহারাত হাফিজের সভাপতিত্বে সভায় কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ, সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রাইসুল আলম খান, উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব শফিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
হাফিজ উদ্দিন আরও বলেন, আওয়ামী লীগ বিচারব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। বিনা ভোটে ক্ষমতায় এসে দেশটাকে বাপের সম্পত্তি বানিয়েছে। দেশে কোনো বিচার-আচার নেই। শুধু টাকা আর চাঁদাবাজি। সামান্য নাইটগার্ড, পিয়ন নিয়োগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আওয়ামী লীগের অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়ে গায়েবি মামলার আসামি হয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রামে গিয়ে রিকশা চালাচ্ছেন, দোকানে কাজ করছেন। গত ১৬ বছর তাঁরা মানবেতর জীবন কাটিয়েছেন।
ড. ইউনূসের প্রশংসা করে বিএনপি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মেজর (অব.) হাফিজ বলেন, লোভ করবেন না। কোনো চাঁদাবাজি হবে না, চাঁদাবাজি হতে দেবেন না, ব্যবসা-বাণিজ্য করে, কাজ করে সাধারণভাবে জীবন যাপন করবেন। ব্যবসায়ীরা যেন নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারেন। হিন্দু সম্প্রদায় ও আওয়ামী লীগের ওপর নির্যাতন করবেন না। যাঁরা অত্যাচার-নির্যাতন করেছেন, তাঁদের আইনের আওতায় আনা হবে।