একাধিক বহুতল ভবনের লাইন নির্মাণ ও সংযোগের নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে, নিজেদের পকেট ভারি করে অবৈধভাবে সংযোগ প্রদান করার অভিযোগ উঠেছে মানিকগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাটুরিয়া জোনাল অফিসের ওয়্যারিং ইন্সপেক্টর মোজাম্মেল সহ একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। জানা যায়, উপজেলার চর-সাটুরিয়া গ্রামে হাজী দলিল উদ্দিন আহমেদ কমপ্লেক্সের ৫ তলা বিশিষ্ট বহুতল ভবন, পশ্চিম কাউন্নারা পারভেজ ও মাসুদের আবাসিক বাসভবন, নান্দেশ্বরী জগত নগর মীর হোসেনের আবাসিক বাসভবন ও বালিয়াটি নার্গিস খানমের বহুতল ভবনের লাইন নির্মাণ ও সংযোগে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকসান করে গ্রাহকের কাছ থেকে দালালদের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা নিয়ে সংযোগ প্রদান করার অভিযোগ উঠেছে সমিতির একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। চর-সাটুরিয়া গ্রামে হাজী দলিল উদ্দিন আহমেদ কমপ্লেক্সের মালিকের ভাই নজরুল ইসলাম বলেন, আমি তো এখনো থ্রি-ফেজ লাইন পাই নাই,তবে আমার সবগুলো মিটারে সংযোগ আছে । সুশান্তের মাধ্যমে ১৯ হাজার টাকা দিয়েছি অফিসে, লাইনের আবদেন করতে আরো ১৫০০ টাকা নিয়েছেন শুশান্ত। আমার ভাইতো বিদেশ থাকে তারই বাড়ি এটা। বহুতল ভবনের আরেক মালিক নার্গিস খানম জানান, আমি একাধিক মিটারের জন্য আবেদন করেছি যা প্রয়োজন । কিন্তু আমাকে মিটার দিয়েছে মাত্র দুইটি । বাকি মিটারের কথা বললে নানান তালবাহানা করে তারা। রাজু নামের এক ছেলে আমার কাছ থেকে অফিসারদের কথা বলে এসব লাইন নির্মাণ বাবদ কয়েকবার টাকা নিয়েছে । মোটামুটি ৬০ হাজার টাকার মত আমি ইতিমধ্যেই দিয়েছি আরও টাকা চাইছে। এই মিটার ও সংযোগ নিয়ে নানান হয়রানিতে আছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভবন মালিক বলেন, কি আর বলব ভাই! সাটুরিয়া পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকদের যে কি পরিমান হয়রানি করে,তা নিজের বাড়ির লাইন নিতে না গেলে বুঝতাম না। প্রথমে আমাগো অনেক নিয়ম শুনাইলো তারা যখন টাকা দিলাম ভাই, লাইনের জন্য আবেদনটাও নিজের হাতে করতে হয় নাই সবই তারা করে দিয়েছে। তবে টাকা খরচ হয়েছে অনেক প্রায় লাখ তিনেকের মত টাকা খরচ হয়েছে আমার। আপনাদের কাছে অনুরোধ আমার নামটা প্রকাশ কইরেন না। রাজু বলেন, সাটুরিয়া অফিসে আমরা কোন কিছু না। যা করেন ওয়্যারিং ইন্সপেক্টর স্যার করেন। তার মাধ্যমেই সব লেনদেন ও লাইন সংযোগ হয়ে থাকে। স্যার টাকা খায় এটা কে না জানে? উল্লেখ্য, আবাসিক ভবনের নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের পরিপত্রে বলা আছে, আবাসিক গ্রাহকগনের ক্ষেত্রে ছাদে কমপক্ষে ১ হাজার বর্গফুট জায়গা থাকলে নেট মিটারিং পদ্ধতিতে রুফ টপ সোলার প্যানেল অবশ্যই স্থাপন করতে হবে । এক্ষেত্রে সিঙ্গেল ফেইজ সংযোগের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ১ কিলো ওয়াট (১০০০ ওয়াট) পিক ক্ষমতার নেট মিটারিং সোলার সিস্টেম স্থাপন করতে হবে এবং থ্রি ফেইজ সংযোগের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৩ কিলো ওয়াট (৩০০০) ওয়াট পিক নেট মিটারিং সোলার সিস্টেম স্থাপন করতে হবে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল এবং দাতব্য প্রতিষ্ঠানে সিংগেল ফেইজ সংযোগের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ১ কিলো ওয়াট পিক ক্ষমতার নেট মিটারিং সোলার সিস্টেম স্থাপন করতে হবে এবং থ্রি ফেইজ সংযোগের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৩ কিলো ওয়াট (৩০০০ওয়াট) পিক নেট মিটারিং সোলার সিস্টেম স্থাপন করতে হবে। সোলার প্যানেল স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা না থাকলে কম্পানির প্রধানগন তিন সদস্যের টিম গঠন করে সড়জমিন তদন্ত পূর্বক বাস্তবতার নিরিখে সোলার প্যানেলের ক্ষমতা নির্ধারণ করে দিতে হবে। তবে সোলার প্যানেল অবশ্যই স্থাপন করতে হবে। এসব নিয়মের কিছুই মানেন না মানিকগঞ্জ পল্লী বিদুৎ সমিতির সাটুরিয়া জোনাল অফিসের কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাটুরিয়া জোনাল অফিসের ওয়্যারিং ইন্সপেক্টর মোজাম্মেল হক বলেন, সাটুরিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে নিয়মমাফিক লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। কোনোরকম আর্থিক লেনদেন ছাড়াই লাইন সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাটুরিয়া জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মামুন উর রশিদ বলেন, আবাসিক ও বাণিজ্যিক লাইনে যদি কোন অনিয়ম হয়ে থাকে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।