বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রাণ হারিয়েছেন দেশের শত শত মানুষ। রক্ত ঝরেছে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর। সড়কের পাশের ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে তাদের স্মৃতিকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন চাঁদপুরের শিক্ষার্থীরা। বিবর্ণ অতীত মুছে দেয়ালে দেয়ালে ‘স্বপ্নলিপি’ আঁকছেন তারা। শিক্ষার্থীরা অনেক দেয়ালে নতুন করে লিখছেন দেশ সংস্কারের নানা স্লোগান ও বিভিন্ন শিল্পকর্মও আঁকছেন। চাঁদপুর শহরে গত ৫ আগস্টের পর থেকে এই কার্যক্রম চলছে। রোববার (১১ আগস্ট) সকাল থেকেই শিক্ষার্থীদের শহরের মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দুটি দেয়ালে এ চিত্রকর্ম করতে দেখা যায়। চাঁদপুর শহর ও আশপাশের অঞ্চলে বসাবাসরত বিভিন্ন বিদ্যালয়, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ কর্মযজ্ঞে অংশ নেন। তারা গত কয়েকদিনে চাঁদপুর সরকারি কলেজ, চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ চাঁদপুর, মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনের দেয়ালগুলোতে বিভিন্ন শিল্পকর্মও আঁকছেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর চাঁদপুরের শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে জেলা শহরের বিভিন্ন সড়ক, থানা, পৌরসভার লেক ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করেছেন। একই সঙ্গে তারা শহরের ওয়ারলেস, বিপনীবাগ ও পালবাজারে বাজার মনিটরিং করেছেন। তাদের এই কাজে সহযোগিতা করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলা কার্যালয় ও স্কাউট। এছাড়া চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কের বাবুরহাট থেকে শুরু করে শহর এবং শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় কাজ করছেন বহু শিক্ষার্থী। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তারা এই দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের সঙ্গে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) ও স্কাউট সদস্যরা। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার এই কাজ শুধুমাত্র চাঁদপুর শহরে নয়, জেলার ফরিদগঞ্জ, হাইমচর, মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি ও কচুয়া উপজেলায় একইভাবে চলছে। জেলা শহরের সড়কে দায়িত্বপালনকারী একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা না থাকায় আমরা জনদুর্ভোগ কমাতে নিজ উদ্যোগে এই কাজ করছি। আইনশৃঙ্খলা অবস্থা স্বাভাবিক ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা কর্মস্থলে যোগ দিলে, আমাদের আর এ কাজটি করতে হবে না। আমরা এখন সড়কে চালকের নিয়ম মেনে চলার অনুরোধ করে যাচ্ছি।