দেশের অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কর্মবিরতিতে যাওয়া মেহেরপুর জেলার পুলিশ সদস্যরা সেনাবাহিনীর সহায়তায় কাজে ফিরতে শুরু করেছে। শুক্রবার (১০ আগস্ট) থেকে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টহল চলছে পুরো জেলা জুড়ে। এতে মানুষের মাঝে অনেকটাই স্বস্তি ফিরে এসেছে। গত ৫ আগষ্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর সন্ধায় মুজিবনগর থানা ঘেরাও করে সাধারণ জনতা। এসময় ভয়ে ওই থানায় দায়িত্বরত ওসি উজ্জল দত্ত থানাসহ কয়েকজন পালিয়ে যায়। পরে বিএনপি, জামায়াত ইসলামি ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সহায়তায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পরে ওসি উজ্জ্বল দত্ত ফিরে আসলে অন্য পুলিশ সদস্যদের তোপের মুখে থানা ছাড়েন তিনি। ওইদিন রাতেই থানার ওসির দায়িত্ব নেন ডিবি ওসি সাইফুল আলম। সেদিন থেকেই সারাদেশে পুলিশের কর্মবিরতির অংশ হিসেবে মুজিবনগর থানার পুলিস সদস্যরাও কর্মবিরতিতে চলে যান। তবে ১০ আগষ্ট থেকে থানার কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এছাড়াও মেহেরপুর সদর ও গাংনী থানার পুলিশ সদস্যরাও কাজে ফিরতে শুরু করেছে। সেনাবাহিনীর সহায়তা পেয়ে থানাগুলোর সদস্যরা গত শুক্রবার রাত থেকেই টহল শুরু করেছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের গাড়ী বহর জেলা শহর থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যন্ত টহল দিচ্ছে। তারা স্থানীয় মানুষের সাথে কথা বলে নানা প্রকার পরামর্শ দিয়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করছেন। সেনাবাহিনীর সহায়তায় পুলিশের ডিউটি শুরুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ কনি মিয়া, গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম এবং মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম। এ প্রসঙ্গে তারা বলেন, চলমান আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য সেনাবাহিনীর সহায়তায় ডিউটি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এর মাধ্যমে সবকিছুই স্বাভাবিক হবে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সাথে মাঠে কাজ শুরু করেছে পুলিশ। তবে মেহেরপুরের কোথায় এখনো ট্রাফিক পুলিশের দেখা নেই। ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে বিএনসিসি’র সদস্য ও আনসার সদস্যরা। এব্যাপারে ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের সাথে যোগাযোগ করা হলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। এছাড়াও স্থানীয় মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গেল কয়েকদিন আতংকে সময় পার হয়েছে। পুলিশের কোন কার্যক্রম না থাকায় সেই আতংক বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুণ। সেনাবাহিনীর গাড়ী বহরের সাথে পুলিশ সদস্যদের গাড়ী দেখে জনমনে স্বস্তি ফিরেছে। সবার আস্থার প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় পুলিশের কার্যক্রম দ্রুত আরও স্বাভাবিক হবে বলে আশার কথা জানালেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।