অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শিক্ষার্থীদের গণঅভ্যুত্থানে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে তা ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। তোমরা যেটা করেছ, সেটাকে আমরা বলছি দ্বিতীয় বিজয় উৎসব। এই বিজয় উৎসবটা যাতে আমাদের হাত থেকে ফসকে না যায়। শনিবার দুপুরে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে আয়োজিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। ড. ইউনূস বলেন, তোমাদের যে ক্ষমতা, তা হলো অসম্ভবকে সম্ভব করার ক্ষমতা। শুধু বাংলাদেশ না, তোমরা সারা দুনিয়া পাল্টে ফেলতে পারো। দ্বিতীয় বিজয় ধরে রাখতে শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, এবার যেন ব্যর্থ না হয়। ব্যর্থ করার জন্য বহু লোক দাঁড়িয়ে আছে। তোমরা জানো, তোমাদের ব্যর্থ করে দেওয়ার জন্য। যা আছে কপালে, আমাদের জেনারেশন সব বাদ দিয়ে দাও। পরিষ্কার না করা পর্যন্ত আমাদের ছুটি নাই। তিনি বলেন, আমরা পারি নাই, আমরা ব্যর্থ হয়েছি। তোমাদের যে জায়গায় চলে যাওয়ার কথা ছিল, তোমাদের আমরা সে জায়গায় নিয়ে যেতে পারি নাই। তোমরা যেন ব্যর্থ না হও। তোমাদের পরে যারা আসছে, তারা যেন এ কথা না বলে, তোমরা পথ আগলে রেখেছিলে বলে আমরা ঢুকতে পারিনি। ড. ইউনূস বলেন, আজকে গেলাম আবু সাঈদের বাড়িতে, সে শুধু এখানে প্রাণ দিয়েছে-তা নয়। আবু সাঈদ হলো মহাকাব্যের চরিত্র। ভবিষ্যতে এটা নিয়ে বহু কবিতা, বহু সাহিত্য, বহু কিছু রচিত হবে। তিনি বলেন, সে দেখিয়ে গেল, চমকে গেছে মানুষ! গুলিটা খাওয়ার ছবি দেখলো, আর মানুষকে থামানো যায়নি। সবার তখন মনে হয়েছে, আমিই তো আবু সাঈদ। মারো কত মারতে পারো। সারা দুনিয়া চমকে গেছে। তোমরা যেটা করেছ, এটা শুধু বাংলাদেশের ঘটনা না। সবাই দেখছে, একটা সরকার এই ছাত্ররা কীভাবে উঠিয়ে ফেলতে পারে। ড. ইউনূস বলেন, পথ এখনো বাকি আছে। গন্তব্য হলো মুক্ত হয়ে যাওয়া। আমাদের কেউ পেছনে টেনে রাখতে পারবে না। নিয়ম-নীতি যা আছে, নিয়ম-নীতির মতো চলবে। হিন্দুদের আক্রমণ চলছে, বৌদ্ধদের আক্রমণ চলছে। কয়জন আছে! কী জন্য তাদের নিয়ে টানাটানি! এরা কি দেশের মানুষ না! শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমরা যখন দেশ রক্ষা করতে পেরেছ, কয়েকটা পরিবার রক্ষা করতে পারবে না। ড. ইউনূস বলেন, কষ্ট লাগে। সেও তোমাদের সঙ্গে ছিল, তার ছেলে তোমাদের সঙ্গে ছিল কিন্তু বাড়ি গিয়ে দেখে তার ঘরে লুটপাট। তিনি বলেন, বেগম রোকেয়া নারীদের মুক্ত করেছেন, এখন পুরো রংপুর সারা বাংলাদেশকে মুক্ত করবে।