বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েক সমন্বয়ককে হেফাজতে নেওয়ার ঘটনায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। বিশেষ করে এ ঘটনাসহ বেশ কিছু কারণে ক্ষুব্ধ থাকা শিক্ষার্থীরা মিন্টো রোডে সংস্থাটির কার্যালয়ের প্রধান ফটকে লিখে রেখেছিলেন ‘ভুয়া পুলিশ’সহ নানা স্লোগান। তবে শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর পাল্টে যাচ্ছে দৃশ্যপট। দেয়াল লিখন ও স্লোগানের ভাষায়ও পরিবর্তন আনছেন প্রতিবাদী শিক্ষার্থীরা। ডিবি কার্যালয়ের প্রধান ফটকে এবার তারা রংতুলিতে লিখে রেখেছেন– ‘ঘুষ বন্ধ’, ‘পুলিশকে জনগণের সেবা করতে হবে’: আদেশক্রমে সাধারণ জনগণ। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলার সময় গত সোমবার ডিবি কার্যালয় থেকে বের হয়ে যান কর্মকর্তাসহ সবাই। শুক্রবারও কেউ অফিস করেননি। দু-একজন এলেও হাজিরা দিয়ে বের হয়ে যান। সেনাবাহিনী ও আনসার সদস্যরা এই কার্যালয়ের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছেন। আজ রোববার থেকে ডিবি অফিস চালু হতে পারে বলে ওই কার্যালয়ের সামনে দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়। তবে ডিবির কোনো কর্মকর্তার কাছ থেকে এ ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। ডিবি কার্যালয়ের পাশেই জনপ্রিয় বেইলি রোড। শান্তিনগর রোডের মুখ থেকে অফিসার্স ক্লাব পর্যন্ত প্রায় ৪০০ মিটার এই শাখা রোডের বিভিন্ন দেয়ালেও সরকার পতনের বিভিন্ন স্লোগানে ঠাসা ছিল। এসব দেয়ালে এখন দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন প্রতিবাদী ও শিক্ষামূলক কার্টুন এবং সাম্যের স্লোগান। কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে আঁকা হয়েছে ছবিও। বেইলি রোডে সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের দেয়াল রাঙাতে দেখা যায় ওই কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ফারহানা হক, শাহেলা আক্তার ও ইশরাত জাহান অহনাকে। তাদের মধ্যে কেউ সাদা, কেউ নীল রঙে দেয়াল রাঙাতে ব্যস্ত। তাদের পাশেই আরও অনেক শিক্ষার্থী আঁকাআঁকি করছিলেন। শিক্ষার্থী ইভা আক্তার ও নুসরাত জাহান নিপা দেয়ালে এঁকেছেন দেশের মানচিত্রের মধ্যে আবু সাঈদের দুই হাতের আলিঙ্গনের ছবি। ওই ছবিতেই সাঈদের পেটের বাঁ পাশে বুলেটের আঘাতের চিহ্ন, সেখান থেকে রক্ত ঝরার দৃশ্য ফুটিয়ে তুলেছেন তারা। শিক্ষার্থীরা বলেন, সারা দুনিয়া দেখেছে, সাঈদকে কীভাবে মারা হয়েছে।