রেশন, ঝুঁকিভাতা, যাতায়াত ভাতা নিশ্চিত, নিয়োগ নীতিমালা সংশোধন করে প্রতিবছর নিয়োগ কার্যক্রম অব্যহত এবং ৩ বছর পর পর পদোন্নতির ব্যবস্থাসহ ১২ দফা দাবীতে কর্মবিরতি পালন করছেন লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগে কর্মরত নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) সদস্যরা। গত ৮আগষ্ট থেকে তারা কর্মবিরতি পালন করছেন।
এবিষয়ে শনিবার সন্ধ্যায় রেলওয়ে স্টেশনে আরএনবি সদস্যরা সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় লালমনিরহাট রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর এএসআই মশিউর রহমান লিখিত বক্তব্যে ওই ১২দফা দাবী পেশ করেন। এরআগে তারা স্টেশন প্লাটফর্মে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে তারা উপদেষ্টা, রেলপথ মন্ত্রনালয় বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এদিকে গত ৩দিন থেকে লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ স্টেশনে আরএনবি সদস্যরা দায়িত্ব পালন না করায় অরক্ষিত অবস্থায় নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে রেলের সকল স্থাপনাসহ সকল ট্রেন।
শনিবার সন্ধ্যায় লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, আরএনবি সদস্যরা স্টেশনের প্লাটফর্মে জড়ো হয়ে কর্মবিরতি পালন করছে। গত ৩দিন থেকে তারা কোনো স্থাপনায় নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেননি। এতক রেলওয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ কোনো স্টেশন ও স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনগুলো নিরাপত্তা ঝুঁকিতে। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে যেন স্টেশনের চারিদিকে শুনশান নিরবতা বিরাজ করে।
এব্যাপারে লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ড্যান্ট অফিসার মোরশেদ আলম বলেন, আরএনবি সদস্যদের কিছু দাবি–দাওয়া আছে। দাবি গুলো লিখিতভাবে উপদেষ্টা, রেলপথ মন্ত্রনালয় বরাবর পাঠানো হয়েছে। আর তাদেরকে যার যার স্থানে দায়িত্ব পালন করতে বলেছি। তারা আশ্বস্ত করেছেন, কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে যে যার দায়িত্ব পালনের স্থানে চলে যাবেন।
উল্লেখ্য, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীদের ১২দফা দাবীগুলো হলো, ‘
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী আইন– ২০১৬ অনুযায়ী কর্মচারী না বাহিনী তা সুনিশ্চিত করতে হবে এবং যদি বাহিনী হলে তাহলে বাহিনীর সকল সুযোগসুবিধা (রেশন, ঝুঁকিভাতা, যাতায়াত ভাতা) নিশ্চিত করতে হবে। নিয়োগ নীতিমালা সংশোধন করে প্রতিবছর নিয়োগ কার্যক্রম অব্যহত রাখতে হবে এবং ৩ বছর পর পর পদোন্নতি পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। বাহিনীর নীতিমালা অনুযায়ী নিজস্ব তত্ত্বাবধানে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যের ৮ কর্মঘণ্টা নির্ধারণ করতে হবে। ৮ ঘণ্টার যদি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয় তাহলে তার পরিবর্তে অতিরিক্ত কর্মঘণ্টার ভাতা প্রদান করতে হবে। অন্যান্য বাহিনীর ন্যায় রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর বেতন বৈষম্য দূর করতে হবে। ব্যারাক ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে।সিকিউরিটি ম্যানুয়েল ১৯৮৫ মেনে চার্জ প্রদান করতে হবে। ভোলাগঞ্জ সার্কেলসহ অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ স্থান হতে বাহিনীর সদস্যগণকে প্রত্যাহার করে নিতে হবে।
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী সকল সদস্যের কর্মবিরতি ও দাবি আদায় প্রসঙ্গ নিয়ে কোন প্রকার বিভাগীয় বদলি ও হয়রানি করা যাবে না।