মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় দুপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে পাঁচগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ছানা (৫০) নিহত হয়েছেন। শুক্রবার বেলা ১১টায় উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের মধুর বাজারে সংঘর্ষ শুরু হয়ে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা। তিনি বলেন, চেয়ারম্যানের মৃত্যুর খবর জেনেছি। বিষয়টি অত্যন্ত মর্মান্তিক। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষে শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। আহতদের মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতাল ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের মধুর বাজারের মহেশ দাসের দোকান লুট করা হয়। এ নিয়ে বাজারে উত্তেজনা ছিল। শুক্রবার সকালে মধুর বাজারে লুটকারীদের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা দেওয়ান মিয়ার ভাই ছুনু মিয়ার কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষের গ্রামের লোকজন জানলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রক্তা গ্রামের বিএনপি নেতা পিন্টু সুলতানের নেতৃত্বে ও কেওলা গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা দেওয়ান মিয়ার নেতৃত্বে মধুর বাজারে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এ সময় উভয়পক্ষের শতাধিক লোকজন গুলিবিদ্ধ ও ইটপাটকেলে আহত হন। আহতদের রাজনগর, মৌলভীবাজার ও সিলেটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গুরুতর আহত অবস্থায় পাঁচগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ছানাকে প্রথমে মৌলভীবাজার হাসপাতাল ও পরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে মৌলভীবাজার ও রাজনগরের দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এদিকে চেয়ারম্যান নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে।
নিহত চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ছানার চাচাতো ভাই দেওয়ান মিয়া বলেন, আমার ভাইকে বিএনপি নেতা পিন্টু সুলতান গুলি করে মেরে ফেলেছে। তারা আমাদের সব দোকান লুটপাট করে নিয়ে গেছে।
অপরপক্ষের পিন্টু সুলতান বলেন, আমি আমার আইস ফ্যাক্টরিতে কাজ করার সময় সারমপুর ও কেওলা গ্রামের লোকজন বাজারে হামলা চালায়। পরে আমরা তাদের প্রতিহত করেছি।