বরিশাল জেলার নদী বিচ্ছিন্ন হিজলা উপজেলায় জন্ম। আর নানাবাড়ি দ্বীপ জেলা ভোলার মনপুরায়। আত্মজীবনীতে নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে লিখেছেন, বংশ পরম্পরায় মোগল হতে পর্তুগিজের রক্ত প্রবাহিত শরীরে। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সব আলোচনায় থাকেন তিনি, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন। পেয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।
সাখাওয়াত হোসেন একাধারে লেখক, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সরকারের সাবেক নির্বাচন কমিশনার (২০০৭-২০১২)। তার জন্ম ১৯৪৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বরিশালের হিজলা উপজেলার গ্রামের বাড়িতে। তার বাবা প্রয়াত ডা. বেলায়েত হোসেন এবং মা ওয়াজিফা খাতুন। বাবা ডা. বেলায়েত হোসেন ছিলেন ভোলার তৎকালীন এনিমেল হাজবেন্ড্রি। সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম হিজলায় গ্রামের বাড়িতে হলেও চার বছর বয়স থেকে নানাবাড়ি ভোলার মনপুরায় বেড়ে ওঠেন। সাখাওয়াত হোসেনের দাদা সফদরউদ্দিন মুন্সী ছিলেন হিজলার জোতদার। উভয় পরিবারই মেঘনা নদীর ভাঙনের শিকার।
চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার বড় সাখাওয়াত হোসেন এখন বসবাস করেন ঢাকায়। তিনি ১৯৬৬ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন এবং দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রায় দুই বছর পাকিস্তানের বন্দি শিবিরে কাটিয়ে ১৯৭৩ সালে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় ৪৬ ব্রিগেডে স্টাফ অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
তিনি ১৯৭৯-৮১ সালে ঢাকায় সেনাসদরে গুরুত্বপূর্ণ পদে অপারেশন ডাইরেক্টরেট নিয়োজিত হন। পরে তিনি ব্রিগেডের অধিনায়ক হিসেবে দুটি ইনফেনট্রি ব্রিগেড ও একটি আর্টিলারি ব্রিগেডের অধিনায়ক ছিলেন। বাংলাদেশের ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করে দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিখ্যাত ইউ এস এ কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ জেনারেল কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন।
সাখাওয়াত হোসেন পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডিফেন্স এ ডি সি ইসলামাবাদ ইউনিভার্সিটির তত্ত্বাবধানে স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে মাস্টার্স এবং ২০১১ সালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্, ঢাকা থেকে এমফিল ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে নিরাপত্তা, ভূ-রাজনীতি এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষণধর্মী কলাম ও বইয়ের লেখক হিসেবে অধিক পরিচিত।
তাছাড়া দেশি-বিদেশি ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনীতি এবং নির্বাচন বিষয়ে বিশ্লেষক হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। এ ছাড়া ২০০৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ বছর তিনি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।