বর্ষা মৌসুমের শেষ পর্যায়ে বৃষ্টিপাত বাড়ায় বরগুনার বিভিন্ন নদী, খাল, বিল, পুকুর ও জলাশয়ে প্রচুর প্রাকৃতিক দেশী প্রজাতির মাছ পাওয়া যাচ্ছে। পেশাদার জেলে ও সৌখিন মাছ শিকারিরা বরশি ও নানা ধরনের জাল দিয়ে এসব মাছ ধরছেন। বাজারে গত এক সপ্তাহ ধরে দেশী মাছের আধিক্য লক্ষ্য করা গেছে। অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞার পরে, প্রতিকুল আবহাওয়া থাকায় সাগর থেকে খুব উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ইলিশ না এলেও নদসমূহ থেকে স্থানীয় বাজাগুলোতে আসা ইলিশ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েছে। জেলার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের (বিএফডিসি) বিপনন বিভাগ জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে সেখানে ৫৮ টন ইলিশ কেনা-বেচা হয়েছে।আজ বৃহস্পতিবার সকালে দেখা গেছে, কেজি সাইজের ইলিশের মণপ্রতি দর চলছে ৭০ হাজার টাকা। জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরি জানান, গত বছরের তুলনায় এখনো ইলিশ কম হলেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে মাছের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। জেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, জলবায়ুর পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অসচেতনতা, অবাধে ফসলের জমিতে ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহারের কারণে সারাদেশে দেশীয় মাছের অস্তিত্ব প্রায় বিলীনের পথে হলেও বরগুনায় এখনো বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ দেখা মেলে প্রচুর পরিমানে। দেশীয় জাতের এসব মাছের মধ্যে রয়েছে শোল, বেলে, কাজলি, সরপুঁটি, পাবদা, খৈলশা, টাকি, কৈ, চিংড়ি, গজার, টেংরা, চিতল, শিং, খয়রা, বাটা, পাইশ্যা, কালিবাউশ, ডগরি, জাবা, ভোলা, বাগাড়, বাঁশপাতা, কাইন, দেশি পুঁটিসহ অর্ধশত প্রজাতির মাছ। শ্রাবনের শেষে বাজারে এই মাছগুলোর আধিক্য রয়েছে। স্থানীয় মানুষের সাথে আলাপকালে তারা জানান, দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছের স্বাদ অতুলনীয়। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ গত কয়েক বছরের তুলনায় দামটা খুবই বেশি। জেলা মৎস্য বিভাগের সিনিয়র কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু জানান, পানি দূষণ, জলাশয়ের গভীররা হ্রাস, ছোট মাছ ধরার জন্য কারেন্ট জালের ব্যবহারের কারণে দেশি প্রজাতি মাছ ধ্বংস হচ্ছে। মৎস্য বিভাগ এ ব্যাপারে সচেতন করার কাজ করছে।