বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ভাসানী অনুসারী পরিষদের উদ্যোগে দেশে চলমান হামলা, ভাংচুর, লুটপাট, সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগের মত নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ ছাত্র-জনতাকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করার আহ্বানে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টি (জাফর) এর চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি, গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক, গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা কমরেড সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক, গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা এডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডি’র সাধারণ সম্পাদক, গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন। আরো বক্তব্য রাখেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। সভায় বক্তাগণ বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। ড. ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্র্বতীকালীন যে সরকার গঠিত হচ্ছে সে সরকার জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু এবং সঞ্চালনা করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব ড. আবু ইউসুফ সেলিম। সভায় ভাসানী অনুসারী পরিষদের পক্ষে নিম্নোক্ত ৭ দফা দাবিনামা পেশ করেন।
০১। অবিলম্বে দেশে আইন শৃংঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করার জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনুছ এর নেতৃত্বে অন্তবর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যাহারা আইন শৃংঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাইয়া লুটতরাজ ও সংখ্যা- লুঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলা সহিংসতা সৃষ্টি করে দেশকে নৈরাজ্যর দিকে ঠেলে দিচ্ছে তাহাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
০২। ছাত্র জনতার অভ্যূত্থানে যাহারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপুরণ এবং আহতদের সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। নিহত আবু সাঈদসহ কোটা আন্দোলনের অংশগ্রহনকারী যেসব ছাত্র নেতা শহীদ হয়েছেন তাদেরকে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় খেতাবে ভূষিত করতে হবে।
০৩। ছাত্র জনতার এই গণঅভ্যূত্থান সংগঠিত হয়েছে ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থার বিলোপ সাধন এবং রাষ্ট্রের সংস্কার ও শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন করে নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। সে লক্ষ্যে ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সাম্য-মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
০৪। এই রাষ্ট্রের জাতীর পিতার হকদার একমাত্র মওলানা ভাসানী অবিলম্বে সংবিধান সংশোধন করে মওলানা ভাসানী, শের-ই বাংলা ফজলুল হক, শেখ মুজিবর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক ঘোষক জিয়াউর রহমানসহ ফোর ফাদার ন্যাশন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গণ ভবন, বঙ্গ ভবনসহ সরকারী, আধা সরকারী প্রতিষ্ঠানে চার নেতার ছবি টাঙ্গিয়ে আমাদের মুক্তি সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতাদের উপযুক্ত মর্যাদা প্রদান করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুখি সমৃদ্ধশালী দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
০৫। সকল লুটেরা পাচারকারীদের লুটের ও পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে এনে লুটেরা ও পাচারকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং যথাযথ আইনের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দিতে হবে, ভবিষ্যৎতে যেন এই নতুন বাংলাদেশে লুটেরা ও পাচারকারী সৃষ্টি না হয়। এস.আলম গ্রুপ, সামিট গ্রুপের সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় সম্পদে পরিনত করতে হবে।
০৬। আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার দায়ের খুনি হাসিনা’কে অভিযুক্ত করে ইন্টার পোলের মাধ্যমে গ্রেফতার করে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনতে হবে। খুনি হাসিনার সহযোগী আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সকল সদস্য এবং সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারী যাদের সহযোগীতায় ভোটের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, তাদেরকে উপযুক্ত বিচারের আওতায় আনতে হবে। ভবিষ্যৎতে আর কেহ যেন ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে।
০৭। ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী যে কোন একজনকে অন্তবর্তীকালীন সরকারের উপদেস্টা করার জোর দাবী জানাচ্ছি। সেই ব্যক্তিটি যেন খুনি হাসিনা সরকারের কোন সুবিধাভোগী না হয়।