শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালাবার ঘোষণার পর সোমবার বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে শেখ হাসিনার ক্ষমতা হস্তান্তর ও দেশ ছেড়ে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে রাস্তায়। বিকাল থেকে খন্ডখন্ড মিছিল শুরু হয় বিভিন্ন এলাকা থেকে। রাস্তায় নেমে এসে উল্লাসে মাতে মানুষ। মিছিল শেষ করেই বিক্ষুব্দ জনতা, মুক্তিযোদ্ধা ভিত্তিক মুজিবনগর কমপ্লেক্সেসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ করে। এসময় মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক কমপ্লেক্সে শেখ মুজিবর রহমানের মুরালসহ বিভিন্ন মুরাল ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। জেলা আওয়ামী লীগের অফিস, জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপির বাসভবন, বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক খোকনের ব্যক্তিগত অফিস ও গোডাউন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ইয়ারুল ইসলামের অফিস, মেহেরপুর জজকোটে পিপি পল্লব ভট্টাচার্যের বাসভবন, মেহেরপুর প্রেস ক্লাব, ভাইভাই ফ্যাশন, লুকস ফ্যাশান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুস ছামাদ বাবলু বিশ্বাসের শহর ও গ্রামের বাড়ি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. আব্দুস সালামের বাসভবন, যুবলীগ নেতা নাহিদের বাড়ি, আরোহী বস্ত্রালয়, রশিদা ইলেকট্রনিকস, ঠিকাদার মাহাবুবের বাড়ি ভাংচুর অগ্নিসংযোগ করে। এদিকে গাংনী উপজেলা শহরের হাসপাতাল বাজার এলাকার মেহেরপুর-২ আসনের এমপি ডাক্তার এএসএম নাজমুল হক সাগরের এ্যাডভান্সড মেড কেয়ার ক্লিনিক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ খালেকের বাসভবন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মকলেছুর রহমান মুকুলের রাজনৈতিক কার্যালয়, গাংনী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক হাসানের চৌগাছার বাড়ি, গাংনী পৌরসভার কর্মচারি টিক্কার বনবিভাগ পাড়ার বাড়ি, সাবেক ছাত্রলীগের নেতা শাহাদুজ্জামান শিপুর ব্যক্তিগত অফিস আগ্নি সয়যোগ ও ভাঙচুর করে। মুজিবনগরে আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মেহেরপুর শহীদ শামসুজ্জোহা নগর উদ্যান, পৌরসভার কমিউনিটি সেন্টারের সামনের গেটের সাথে লাগানো শেখ মুজিবুর রহমানের মুর্যাল ভাঙচুর করা হয়। একই সাথে শহরের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের ব্যানার, ফেস্টুন, শেখ মুজিবের ছবিসহ শেখ হাসিনার ছবি ছিঁড়ে আগ্নি সংযোগ করে। তবে রাত সাড়ে এগারটার দিকে সেনাবাহিনী শহরে টহল দিতে শুরু করে। এসময় তারা মাইকিং করে জনসাধারণকে সেনাবাহিনীর উপর আস্থা রেখে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থানের আহ্বান জানালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এর আগে মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুন মেহেরপুর শহরে শান্তি-শৃখলা রক্ষা ও সংখালঘুসহ সকলের জানমালের হেফাজতের জন্য সর্বস্তরের জনতার প্রতি আহ্বান জানান।