বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এখন তারা কোটাবিরোধী আন্দোলন করছে না। এখন তারা বলছে সরকার উৎখাতের অসহযোগ আন্দোলন।
সে আন্দোলনে সহিংসতার দায়দায়িত্বটা তাদেরই নিতে হবে বলে মনে করেন র, আ, ম, উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
রোববার (০৪ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে উবায়দুল মোকতাদির বলেন, তারা অসহযোগ দিয়েছেন, তাদের অসহযোগ দেওয়ার কি আইনগত অধিকার আছে, আমি জানি না। অসহযোগ শুধু বঙ্গবন্ধুর সময়েই হয়েছিল। তখন তো বঙ্গবন্ধুর একটা অথরিটি ছিল, সে জনগণের মাধ্যমে নির্বাচিত ছিলেন। অথরিটিহীন অবস্থায় তারা যদি কোনো নির্দেশনা দেন সেটা জাতি মানবে কিনা সেটা জাতির সিদ্ধান্ত নেবে। তাদের কিন্তু নৈতিক এবং লিগ্যাল কোনো অথরিটি নেই।
যারা বলছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তারা বস্তুত কিন্তু ওই অবস্থানে নেই। তারা কিন্তু এখন রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে মাঠে নেমেছেন।
আজকে যে অবস্থাটা হয়েছে সেটার দায় কার, সরকার কি ব্যর্থ হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি সরকরের কথা বলতে পারবো না, এরজন্য লোক রয়েছে। তবে আমি আমার এলাকায় আজকের দিনের কথা বলতে পারবো। সেখানে আমার দলের কিছু ব্যর্থতা আছেই। ঢাকা সিলেট মহাসড়ক বন্ধ, সেটা বন্ধ করা সবচেয়ে সহজ। আট, দশজন লোক মিলে লাঠিসোটা নিয়ে রাস্তায় দাঁড়ালে রাস্তা বন্ধ করা যায়।
তিনি বলেন, ছাত্ররা কোনো সুস্থ আন্দোলন করছে না। তারা দেশটাকে একটা নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিতে চায়। তার প্রমাণ হলো, আজকের যে অসহযোগ আন্দোলন করছে। আগেরগুলোতে তাদের কতটুকু দায়বদ্ধতা ছিল জানি না। তবে আজকের থেকে পুরো দায়বদ্ধতা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে নিতে হবে। কারণ তারা এটা বলতে পারবে না যে, লাঠিসোটা নিয়ে তারা নামেনি। আজকে তারা যার বিরুদ্ধে নেমে থাকুক কেন? সরকার, আইন- শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর, নিরীহ পথচারী মানুষের ওপর আক্রমণের সব দায় দায়িত্ব কিন্তু এ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে নিতে হবে।
এরআগে যে হত্যাকাণ্ড হয়েছে সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা আগেই বলেছি সেখানে তৃতীয় পক্ষ ঢুকেছে। তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলেছে এটা আমরা করিনি৷ কিন্তু এখন তারা এ কথা বলতে পারবে না। কারণ এখন তারা ছাত্র বা কোটাবিরোধী আন্দোলন করছে না। এখন তারা বলছে সরকার উৎখাতের আন্দোলন। সে আন্দোলন যদি শান্তিপূর্ণ না হয়, সশস্ত্রতা হয়, সহিংসতা হয় সে দায়দায়িত্বটা কে নেবে। আন্দোলনকারীরা নেবে, তাদের নিতে হবে এটা আমি মনে করি।
সরকার তথা আওয়ামী লীগ কোনো চাপে আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সরকারের বিষয়ে আমি দায়িত্ব নিয়ে কথা বলতে পারবো না। আওয়ামী লীগ এ ধরনের অবস্থা বহুবার মোকাবিলা করেছে। চাপ আমরা, রাজনীতিইতো চাপ। পুরো রাজনীতিই চাপের মধ্যে চাপের মধ্যেই আছি, চাপের মধ্যে থেকেই কাজ করতে হবে। আমরা যেমন চাপের মধ্যে আছি অন্যেরাও চাপের মধ্যে আছে।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে কি বিশৃঙ্খলার মধ্যে পরেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে সব সময় টার্গেট করা হয়। এরআগেও বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার জানামতে এমন কোনো নির্দেশনা নেই, সব জায়গায় একই ধরনের নির্দেশনা যায়। আমাদের পাল্টা আক্রমণের কোনো নির্দেশনা নেই। আমরা সেদিকে যাবো না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার চেষ্টা করবো।
দেশে কি এ মুহূর্তে শান্তিপূর্ণ অবস্থান আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশে পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ অবস্থানে আছে সেটা বলবো না। সেটা পুরোপুরি নষ্ট করে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে আমার মনে হয় না খুব একটা কার্যকর হবে। কারণ আওয়ামী লীগ জনগণকে মোবিলাইজ করছে। আশা করছি কাল থেকে দেশের পরিস্থিতি উন্নত হবে। আমরা মোবিলাইজড করছি, আরও ব্যাপক জনগণ সমাগমের ব্যবস্থা করবো। আমাদের পক্ষেও তো জনগণ আছে।
সরকার কি একটু দেরিতে কাজ করছে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরাতো সব কিছু শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান হবে এটাই মনে করেছিলাম। আমরা ধারণা করেছিলাম ছাত্রদের আন্দোলন ছাত্র আন্দোলন পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকবে। সেটা যে এ অবস্থায় যাবে সেটা অনুমান করতে পারিনি।