অসহযোগ আন্দোলনকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজশাহী। আজ কর্মসূচির পক্ষে ও বিপক্ষে অবস্থান নেওয়াকে কেন্দ্র করে আন্দোলনকারী ও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা মাঠে অবস্থান করছেন।
সবার হাতেই লাঠিসোঁটা, লোহার পাইপ, রড, হকিস্টিকসহ দেশীয় ধরালো অস্ত্রশস্ত্র দেখা যাচ্ছে।
তারা উভয়ই মুখোমুখি হলে যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রোববার (৪ আগস্ট) সকাল থেকেই সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থান রয়েছে।
এরপরও পুরো রাজশাহী শহর জুড়েই থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শহরের বাইরে মোহনপুর উপজেলায় পুলিশ থানা, ভূমি অফিস ও আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনার খবর পাওয়া গেছে।
বর্তমানে আন্দোলনকারীরা মহানগরীর তালাইমারী থেকে বিশাল মিছিল নিয়ে গিয়ে ভদ্রা স্মৃতি অম্লান চত্বরে অবস্থান করছেন। এর প্রায় দুই কিলোমিটার পশ্চিমে থাকা গৌরহাঙ্গা রেলগেট এলাকায় শহীদ কামারুজ্জামান চত্বরে অবস্থান করছেন আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলনকারীরা রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সামনের সড়কে অবস্থান নেন। রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভের পর সেখান থেকে তারা তালাইমারী মোড় হয়ে ভদ্রা এলাকায় আসেন। আসার সময় আন্দোলনকারীরা তালাইমারী মোড় ও ভদ্রা এলাকায় থাকা পুলিশের বেশ কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে ফেলেন।
আগের দিন শনিবারও (৩ আগস্ট) আন্দোলনকারীরা একইভাবে রুয়েটের সামনে থেকে ভদ্রা হয়ে শহীদ কামারুজ্জামান চত্বর পর্যন্ত আসেন। এ সময় পর পর তিনটি পুলিশ বক্সে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এছাড়া শহীদ কামারুজ্জামান চত্বরে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান নেওয়ার সময় বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা জাতীয় নেতা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের স্মৃতি ফলকে থাকা ছবির বিকৃতি ঘটান এবং পাশের থাকা স্মৃতিস্তম্ভের গায়ে (ল্যান্ডমার্ক) নানা ধরনের খারাপ মন্তব্য লেখেন। রাস্তার ওপর কাঠের খড়িতে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
তাই আন্দোলনকারীরা আজ রেলগেট এলাকায় আসলে তাদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এজন্য অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচিকে ঘিরে রাজশাহীতে বর্তমানে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে এখনও আন্দোলনকারীরা ভদ্রা এলাকা থেকে রেলগেটের দিকে আসননি। শিক্ষার্থীদের মাঝে আজ শিবির, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদেরও দেখা গেছে। তাই সহিংসতা ও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় মহানগরীর প্রধান প্রধান সড়কে থাকা সব ধরনের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মো. জামিরুল ইসলাম জানান, আন্দোলনকারীদের কর্মসূচিকে ঘিরে মহানগর পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। কর্মসূচির নামে কেউ রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।