বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ মিছিল থেকে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দুই দফা হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে সুধারাম মডেল থানায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও গুলি করার অভিযোগও করেছে জেলা পুলিশ। পুলিশ বলছে- থানায় গুলি করে দলীয় কার্যালয়ে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
শনিবার (৩ আগস্ট) বিবেল সোয়া ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত জেলা শহর মাইজদীর টাউন হল মোড় এলাকায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দুই দফায় এ হামলা চালানো হয়।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, মূলত থানায় গুলি করে দলীয় কার্যালয়ে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। আন্দোলন চলাকালে নানাভাবে পুলিশকে লক্ষ্য করে উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশ তাদের কোনো বাধা দেয়নি। আজকেও আমরা বাধা দেইনি। আমরা সর্বোচ্চ ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়েছি। আমিও এদেশের নাগরিক। তারা ছাত্র আমি চাকরিজীবী।
পুলিশ সুপার বলেন, আন্দোলনকারীরা সুধারাম মডেল থানার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় থানা লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে। একই সময় বিক্ষোভকারীদের ভেতর থেকে থানা লক্ষ্য করে গুলি করা হয়েছে। গুলিটি থানার ভবনের তৃতীয় তলার একটি জানালার কাচে গিয়ে লেগেছে। তবে এ ঘটনায় কোনো পুলিশ সদস্য আহত হননি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর আড়াইটার দিকে জেলা শহর মাইজদীর বিবি কনভেনশন হলের সামনে প্রধান সড়কে জড়ো হন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে পুরাতন বাস স্ট্যান্ড এলাকার সুপার মার্কেটের সামনের প্রধান সড়ক অবরোধ করে। পরে তারা মিছিল নিয়ে টাউন হল মোড় দিয়ে যাওয়ার সময় প্রথম দফায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে জিলা স্কুল পর্যন্ত চলে যায়। পরবর্তীতে জিলা স্কুল এলাকা থেকে ফিরে আসার সময় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের মূল ফটকের কলাপসিবল গেট ভাঙচুর করে ভেতরে ঢুকে নিচ তলার ব্যানার ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। পরে আন্দোলনকারীরা সরে গেলে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে সড়কে জমে থাকা পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে অগ্নিসংযোগ করা হলেও পুলিশ কিংবা ফায়ার সার্ভিসের কোনো সদস্যকে ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি। বিক্ষোভকারীরা শহরের মাইজদী নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের সামনে একটি যাত্রীবাহী বাস ভাঙচুর করেন।
সুধারাম মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জায়েদুল হক রনি বলেন, গ্রুপ গ্রুপ করে আজকে মিছিল হয়েছে। পার্টি অফিসে আগুন লাগিয়ে ফেরার পথে আমাদের উদ্দ্যেশ্যে তারা বলেছে পার্টি অফিসে আগুন দিসি যা নিভা। এছাড়াও ফায়ার সার্ভিসের সামনে হাজার হাজার মানুষ থাকায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও বের হতে পারেনি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহিদ উল্যাহ খান সোহেল বলেন, কোনো প্রকার উসকানি ছাড়াই আন্দোলনকারীরা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।