লক্ষ্মীপুরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে।
এতে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।
তাৎক্ষণিক তাদের নামপরিচয় জানা যায়নি।
শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে তমিজ মার্কেট এলাকা উপজেলা চেয়ারম্যান টিপুর বাসার সামনে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের দাবি, জুমার নামাজের পরপরই সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুর উস্কানিমূলক আচরণে ঘটনাটি ঘটেছে। শান্ত লক্ষ্মীপুরকে অশান্ত করার পাঁয়তারা করা হয়েছে।
জানা গেছে, জুমার নামাজ শেষে জেলা শহরের চক মসজিদ থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল বের হওয়ার কথা ছিল। সদর উপজেলা চেয়ারম্যান টিপু চকবাজার জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তিনি নেতা-কর্মীদের নিয়ে ওই মসজিদে নামাজ পড়তে যান। নামাজ শেষেই তিনি নেতা-কর্মীদের নিয়ে বের হয়ে মসজিদের মুসল্লিদের সঙ্গে মারমুখী আচরণ করেন এবং তাদের দ্রুত বাসায় যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
এ সময় তার সঙ্গে থাকা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মারমুখী ছিলেন। তারা মসজিদের সামনে থেকে বাজারের বিভিন্ন সড়কে স্লোগান দিয়ে সাধারণ মুসল্লি ও আন্দোলনের উদ্দেশে আসা শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করেন।
পরে তারা মিছিল নিয়ে তমিজ মার্কেট এলাকায় টিপুর বাসার ভেতরে অবস্থান নেয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) হাসান মোস্তফা স্বপনের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সেখানে অবস্থান নেয়।
এদিকে, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মিছিল শেষে হলে আন্দোলনকারীরা বাজার ব্রিজ থেকে মিছিল নিয়ে বের হয়। মিছিলটি চকবাজার মসজিদের সামনে গেলেই শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান শুরু করেন।
মিছিলটি উপজেলা চেয়ারম্যান টিপুর বাসার সামনে গেলে মিছিল থেকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।
এতে পুলিশের বাধা ভেঙে লাঠিসোঁটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা। তারাও শিক্ষার্থীদের ওপর ইট-পাটকেল ছোড়ে। এর মধ্যে ৭-৮ শিক্ষার্থীকে লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। শিক্ষার্থীদের ছোড়া ইট-পাটকেলে ছাত্রলীগের দুজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
চেয়ারম্যান টিপুর উস্কানিতে সৃষ্ট ঘটনায় উপস্থিত পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের টিপুর প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এবি ছিদ্দিক গণমাধ্যমকে বলেন, লক্ষ্মীপুর শান্ত ছিল। সম্পূর্ণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। উপজেলা চেয়ারম্যানের উস্কানিতেই ঘটনাটি ঘটেছে। উনি নেতা-কর্মীদের নিয়ে এখানে অবস্থান না নিলে ইট মারার পরিস্থিতি হতো না। আমাদের উপস্থিতিতে তারা এখানে অবস্থান নেবে কেন? আমরা যদি আওয়ামী লীগের লোকজনকে ভেতরে না রাখতাম তাহলে লক্ষ্মীপুরে আগুন হয়ে যেত।