কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সময়ে দেশে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বৈঠক করেছেন ৯০ দশকের নারী নেত্রীরা। এসময় তারা কোটা আন্দোলনকে পুঁজি করে বিএনপি-জামায়াত জঙ্গিবাদীদের সন্ত্রাস, অগ্নিসংযোগ, নৈরাজ্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিকেলে ধানমন্ডির বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি নাজমা আক্তার এমপির সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুন নাহার চাঁপা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মারুফা আক্তার পপি উপস্থিত ছিলেন। ৯০ দশকের পর থেকে অদ্যবধি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক ছাত্রনেতৃবৃন্দ ও যুব মহিলা লীগের সাবেক নেত্রীবৃন্দ অংশগ্রহণে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় অংশ নিয়ে নারী নেত্রীরা বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর এমন ক্ষত-বিক্ষত বাংলাদেশ আমরা কল্পনা করিনি। সাধারণ ছাত্রদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে দুষ্কৃতিকারীরা। যারা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হওয়া উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ সহ্য করতে পারে না, যারা বাংলাদেশকে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় দেখতে চায় না তারা এমন ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে। যার ফলে দেশের মানুষ দুঃসহ জীবনযাপন করছে। আন্দোলনে পেছনে থেকে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি তাদের অশুভ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছে আর ছাত্রদের সামনে ঠেলে দিয়েছে। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, যারা দুষ্কৃতকারী তাদের চিহ্নিত করে যাতে অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনা হয়।
তারা বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে। ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি বৃথা যেতে পারে না। তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা সবাই বিভেদ ভুলে যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে থাকি তাহলে তাদের প্রতিহত করা সম্ভব। এর পাশাপাশি মুক্তবুদ্ধির চর্চা যাতে শাণিত হয় সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে অনলাইন প্লাটফর্মে আরো বেশি সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, অনলাইন প্লাটফর্মে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি তাদের প্রপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। এই অশুভ শক্তির প্রতিরোধে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে অনলাইনে প্লাটফর্মে জোরালো অবস্থান নিতে হবে।
সভায় ৯০ দশকের নারী নেত্রীরা দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে এনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ খুলে দেয়া এবং শান্তি বজায় রাখার বিষয়ে আলোচনা করেন। কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সাম্প্রতিক ঘটনায় শিশু, শিক্ষার্থী, পথচারী, সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিহত হওয়ায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন।
এছাড়া পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের বাধা প্রদান, নারী সাংবাদিকদের নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির তীব্র নিন্দা জানান। এসময় তারা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় ও নির্দেশনার আলোকে সরকার কর্তৃক দ্রুত পরিপত্র জারি করে সমস্যার সমাধান হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদেরকে আন্দোলন প্রত্যাহার করে ক্লাসে ফিরে যাওয়ায় আহ্বান জানান।
সভায় নেতৃবৃন্দ, কোটা আন্দোলনের নামে বিএনপি-জায়ামাত-জঙ্গিবাদী শক্তির সুপরিকল্পিত, সুসংগঠিত, ধ্বংসাত্মক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও নৈরাজ্যের রাজনীতির বিরুদ্ধে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি অধ্যাপক অপু উকিল, সাবেক এমপি জাকিয়া পারভীন মনি, সাবেক এমপি মমতা হেনা লাভলী, সাবেক এমপি আদিবা আঞ্জুম মিতা, সাবেক এমপি সাবিনা আক্তার তুহিন, কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি এমপি, আশ্রাফুন নেছা পারুল এমপি, সাবেক এমপি এডভোকেট নাভানা আক্তার, হোসনে আরা হাসু, খুজিস্তা নূর ই নাহরিন মুন্নি, শামীমা চৌধুরী বিথি, ইসরাত জাহান নাসরিন, এডভোকেট শাহানাজ পারভীন ডলি, আফসানা ফেরদৌস কেকা, শারমিন ওয়াদুদ নিপা, শামীম জামান নিগার, লুৎফুন্নাহার মুন্নি, জাকিয়া সুলতানা শেলী, নুরজাহান আক্তার সবুজ, শাহিদা আক্তার তন্বী, পূর্বানী রায়, হালিমা আক্তার লাবণ্য, সোহাইলা আফসানা ইকো, নাসরিন সুলতানা, রোজিনা নাছরীন, শামীমা দোলা, জেদ্দা পারভীন খান, চন্দ্রা রায় চম্পা, নাসরিন সুলতানা ঝরা, জেসমিন সামিমা নিঝুম, ফারজানা রিভা, নাসরিন খানম, শারমিন জাহান, সূচনা হালদার, তাপসী ব্যানার্জি, বাণী ইয়াসমিন হাসি, নাছিমা ইসলাম বেবী, শিল্পী বিশ্বাস, জেসমিন নিপা, ইসরাত জাহান অর্চি ও ফারজানা আখতার সুপর্না।
এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন নুরজাহান আক্তার, লীনা আহমেদ রেনা, আমেনা কোহিনূর, শাহনাজ আক্তার, পারভীন চাঁদ, নার্গিস আক্তার, রাশেদা, সোহানী হাসান তিথি, ফরিদা বেগম, নিশাত সাদিয়া, জান্নাতয়ারা জান্নাত, ফারজানা ইয়াসমিন নাসিমা, রাশিদা আক্তার, নাসরিন খানম, শারমিন জাহান, সূচনা হালদার, সুমনা আক্তার লিলি, সারমিন জাহান মেরী, সালমা বিনতে হক, মিনা দেবী ছেত্রী, মম আহমেদ, হেলেন আক্তার, সারমিন আক্তার ময়না, শেখ মাসুদা খানম মেধা, নিলুফা রহমান, জোহরা খানম জবা, হাসিনা শেখ, শেখ স্মৃতি রহমান, মুক্তা বিশ্বাস, ইসরাত জাহান নিপা, শিখা বোস, সাহিদা চৌধুরী, শাহনাজ সুমি, মিলা বেবী ছেত্রী, তানজিলা আইরিন, নাজনীন সুলতানা নাজু, নিলুফা ইসলাম, ফাহমিদা ইয়াসমিন বিথী, লুপা আকতার, আরতী রানী রায়, তানজিলা পারভীন, সোহেলী সুলাতানা, সাবিনা ইয়াসমিন আকন্দ, রশিদা আক্তার, লাবনী আমীন, ফাল্গুনী নন্দী, শামীম আরা বেবী, দীপা তালকুদার, ব্যারিস্টার বি.এম লিপি, শাহানাজ শানু, শাহানাজ রহমান, নুসরাত জাহান রোজা, রানু, মিসেস বিউটি পারভীন, ইসরাত জাহান নাসরিন, কাজী মমতাজ বেগম, উম্মে হানি লাবণী, নুপুর খান দুলি ও সাবিকুন্নাহার তামান্না।