পঞ্চগড়ে নয় দফা দাবি দ্রুত কার্যকর করার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুরে পঞ্চগড়ের সর্বস্তরের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কোটা আন্দোলনের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বীর নেতৃত্বে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হয় শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কে পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়ের সামনে যেতেই মিছিলে বাঁধা দেয় পুলিশ। পরে শিক্ষার্থীদের মিছিল নিয়ে সামনে এগুতেই দেয়নি পুলিশ প্রশাসন। এসময় মিছিল ও সমাবেশে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের চারপাশ থেকে ঘিরে রাখে পুলিশ। পরে প্রায় আধাঁ ঘন্টাব্যাপী পুলিশ বেস্টনীর মাঝে মহাসড়কেই বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা তাদের উপর হামলা, নির্যাতন ও সাধারণ মানুষ সহ শিক্ষার্থীদের অমানবিক নির্যাতন ও কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী যারা হত্যার শিকার হয়েছে সেই হত্যাকারিদের বিচার দাবি, শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না সহ নানা শ্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভ মিছিলে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।পরে বিক্ষোভ সমাবেশে পঞ্চগড় কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, প্রিয় শিক্ষার্থীরা আপনারা জানেন দেশে প্রতিকূল অবস্থা বিরাজ করছে। আমরা দেখেছি একদফা দাবী আদায়ে কোটা আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করা হয়েছে। দেশের সেনাবাহিনী দেশের মানুষের উপর লেলিয়ে পড়েছে। যে বিজিবিকে সীমান্ত পাহাড়ায় নিয়োগ করা হয়েছিল তারা সীমান্ত অরক্ষিত রেখে এ দেশের মানুষের উপর গুলি চালিয়েছে। যেই পুলিশ ভাইয়েরা আপনাদের দেশের শান্তি শৃংখলা রক্ষার জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল। দেশের মানুষের টাকায় আপনাদের বেতন দেয়া হয়। আপনারা নির্বিচারে এসব শিশুদের উপর গুলি চালিয়েছেন। যেই র্যাবকে সন্ত্রাস নির্মূলের জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল সেই র্যাব আজকে ঢাকা শহরে হেলিকপ্টার থেকে মানুষের উপর বোমা নিক্ষেপ করেছে। আমরা এর তীব্র ধিক্কার ও নিন্দা জানাই। আমরা ৯ দফা দাবী পেশ করেছি। সেই ৯ দফা দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত যতই বাধাঁই আসুক, যতই জুলুম আসুক, যতই নির্যাতন আসুক আমরা সব কিছুকে উপেক্ষা করে আন্দোলন অব্যাহত রাখবো।পরে প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে ফেরার পথে ৫ জন কে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। তবে পুলিশ তাদের নাম না জানালেও কোটা আন্দোলনকারীদের সূত্রে জানা গেছে আটক হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন, আলমগীর হোসেন (২১), জিল্লুর রহমান (২২), শাকিল হোসেন (১৮), হাবিবুর রহমান বিপ্লব (১৮)। তবে আরেকজনের নাম পাওয়া যায়নি।এর আগে, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়ার জন্য জেলা শহরের জজ কোর্ট ও আধুনিক সদর হাসপাতাল এলাকায় বিচ্ছিন্ন ভাবে জড়ো হতে থাকে। এসময় অনেককে ব্যাগ কাঁধে দাড়িয়ে থাকতেও দেখা যায়। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ও পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কে পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীকে পিকআপে করে টহল দিতে দেখা যায়। এছাড়া অনেক শিক্ষার্থীকে পুলিশ নাম পরিচয় জেনে বুঝিয়ে বাসায় ফেরত পাঠিয়ে দেয়। তবে ওই এলাকা থেকে তিনজন শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে সদর থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এসএস সিরাজুল হুদা বলেন, আমরা ৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে এসেছি। তাদের পরিবারের সাথে কথা বলা হবে। তবে যদি কোন কিছুতে সম্পৃক্ততা না পাওয়া যায় তাহলে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে।