২৭ জুলাই পল্টনের মোড়ে ‘ছাত্র জনতার পাশে নারীসমাজ’ এর উদ্যোগে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশি হত্যা, হামলা, মামলা ও গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে এক নারী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। চলমান কারফিউ এবং সেনা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীর নজরদারি ভেঙ্গে এই সমাবেশে নারী অধিকারকর্মী, রাজনৈতিককর্মী, গৃহিণী, শিক্ষক, গবেষক, লেখক, আইনজীবীসহ দেশের সর্বস্তরের নারীদের জমায়েত ঘটে। সভায় বক্তব্য রাখেন আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকী, লেখক ও গবেষক রেহনুমা আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক স্নিগ্ধা রেজওয়ানা, আইনজীবী সাদিয়া আরমান, কোটা সংস্কারে আন্দোলনে শহীদ মীর মুগ্ধের স্বজন জাকিয়া শিশির, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট দীপা মল্লিক, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ইডেন কলেজের প্রেসিডেন্ট শাহীনুর সুমি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর প্রেসিডেন্ট নুজিয়া হাসিন রাশা এবং বিপ্লবী নারী ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক আমেনা আক্তার। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিল নারী নেত্রী শিরিন হক, নারী সংহতি, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র, বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, উদীচি শিল্পীগোষ্ঠী, সিপিবি নারী সেল, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ সাম্যবাদী আন্দোলন সংগঠনের বন্ধুরা।
সভায় বক্তারা বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকার প্রধান, আওয়ামী লীগের উচ্চপদস্থ নেতৃবৃন্দ ছাত্রলীগ—যুবলীগকে যেভাবে ছাত্রদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে তা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। পরবতীর্তে পুলিশ এবং বিজিবির সহযোগিতায় ছাত্রলীগ যুবলীগ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর নির্বিচারে গুলি করে। এ পর্যন্ত প্রায় দুইশ’র অধিক ছাত্র ও জনতাকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়। এই মুহুর্তে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্রদের গণগ্রেফতার চলমান। এমনকি গতকাল সন্ধায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিনজন সমন্বয়ককে সরকারবাহিনী তুলে নিয়ে গেছে।‘ বক্তারা বলেন, ‘সরকারের নির্দেশে সেনাবাহিনী এবং পুলিশ জনগণের উপর যেভাবে গুলি ছুঁড়েছে তা সম্পূর্ণ আইনবহির্ভুত ও সংবিধানপরিপন্থী। এই নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড, মামলা ও গণগ্রেফতার কোন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে চলতে পারে না। বক্তারা আওয়ামী সরকারকে প্রত্যাখান করে বলেছে, ‘দেশকে নেতৃত্ব দেবার সমস্ত নৈতিক ভিত্তি এই সরকার হারিয়ে ফেলেছে’। অবিলম্বে তারা সরকারের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন।
বক্তব্য, স্লোগান এবং গণসংগীতের মাধ্যমে সমাবেশটি আয়োজন করা হয়। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল পল্টন মোড় থেকে প্রেসক্লাব মোড়ে এসে শেষ হয়।