যশোর জেলার বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে এখন আগাম শীতকালীন সবজি। নানা রকমের সবজির চাষ হওয়ায় সবুজের সমারোহে বদলে গেছে মাঠের দৃশ্যপট। বাম্পার ফলন ও দাম বেশি পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। এখানকার সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে দেশ-বিদেশে। যশোর আঞ্চলিক কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে, দেশের সবজির একটি বড় অংশ উৎপাদিত হয় যশোরে। গ্রীষ্মকালীন, আগাম শীতকালীন ও শীতকালীন এ তিন ভাগে বারো মাস সবজির চাষ হয়ে থাকে। জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সবজির চাষ হয় যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি, হৈবতপুর ও কাশিমপুর ইউনিয়নে। নতুন করে বাঘারপাড়া ও মণিরামপুরের কিছু এলাকা যোগ হয়েছে। এবার যশোর সদর উপজেলায় আগাম শীতকালীন সবজির চাষ হয়েছে ২৮শ’ হেক্টর। এর মধ্যে সবজির রাজধানী খ্যাত হৈবতপুর ইউনিয়নে ১৩শ’ ২৮ হেক্টর, চুড়ামনকাটি ইউনিয়নে ৪শ’ ২৫ হেক্টর ও কাশিমপুর যশোরে আগাম শীতকালীন হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন সবজির চাষ হয়েছে। বিভিন্ন মাঠ আগাম শীতকালীন সবজিতে ভরা। এ এলাকার সবজির সুনামের পাশাপাশি ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। সবজি চাষি আমিনুর রহমান, শহিদুল ইসলাম, গোলাম রসুল, রাহাদ আলীসহ অনেকে জানান, এ বারের মৌসুমে সব ধরণের সবজিতে বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্তমান বাজার মূল্য বেশি থাকায় তারা প্রতিদিনই সবজি বাজারজাত করছেন। সময়োপযোগী আবহাওয়া ও পরিমাণ মতো বৃষ্টির কারণে ফলন হয়েছে। এখন বাজার দর ভালো হওয়ায় আগাম শীতকালীন সবজি চাষে এবার লাভবান হবেন বলে আশাবাদী। চাষিরা আরো জানান, ভরা মৌসুমে সুযোগ বুঝে অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সবজির দাম কমিয়ে দেয়। তখন তারা কম দামে সবজি বিক্রি করতে বাধ্য হন। বারীনগর ও চুড়ামনকাটি এলাকায় যদি একটি কোল্ড-স্টোরেজ থাকতো তাহলে দাম কমের সময় সবজি বিক্রি না করে সংরক্ষণ করতেন। পরে বাজার বুঝে বেশি দামে বিক্রির সুযোগ পেতেন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার তরফদার জানান, সবজির জেলা হিসেবে যশোর সারা দেশে পরিচিত। এখানকার সবজির সুনাম অনেক। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে তা ছড়িয়ে পড়ছে দেশ বিদেশের বাজারে। তিনি জানান, এবার জেলায় গ্রীষ্মকালীন সবজির চাষ হয়েছে ১৪শ’ হেক্টর জমিতে। সবজির মধ্যে ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, পটল, ঝিঙে, বরবটি উল্লেখযোগ্য। বাম্পার ফলন হয়েছে। দামও মিলছে অনেক। এতে চাষিরা লাভবান হচ্ছে।