চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের পাতা ফাঁদে ধরা পড়েছে অজ্ঞানপার্টির ছয় সদস্য। এসময় তাদের নিকট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে চেতনানাশক পাউডার ও ওষুধ মিশ্রিত জুস। শনিবার (৮ জুন) বেলা ১২টায় চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে প্রেস বিফ্রিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নাজিম উদ্দিন আল আজাদ এসব তথ্য জানান। গ্রেপ্তারকৃতৃরা হলেন- বাগেরহাট জেলার শরণখোলা থানার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের মৃত কাশেম মাঝির ছেলে বাচ্চু মাঝি (৪৮), চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা থানার দুধপাতিলা গ্রামের মৃত গোলাপ মন্ডলের ছেলে হাশেম আলী (৪৮), দর্শনা থানার ঈশ্বরচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত রইচ উদ্দিনের ছেলে মো. সালামত (৫৫), চুয়াডাঙ্গা সদর থানার বোয়ালমারি গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ছেলে শাহাবুদ্দিন ওরফে শুকচাঁন (৩০), জীবননগর থানার সন্তোষপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে ইব্রাহিম ওরফে ইব্রা (৫০) ও একই থানার মৃগমারী গ্রামের নওশাদ মন্ডলের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (৪৭)এর আগে, বেশ কিছুদিন যাবত চুয়াডাঙ্গার পশুহাটে ও পরিবহনের মধ্যে অজ্ঞানপার্টির খপ্পরে পড়েন কয়েকজন গরু ব্যাপারি। এরমধ্যে একাধিক ব্যাপারী নগত অর্থও খুইয়েছেন। এরপর জেলা পুলিশের টনক নড়ে। জেলার থানাসহ বিভিন্ন ইউনিটের একাধিক টিম অজ্ঞানপার্টির সদস্যদের ধরতে মাঠে নামে।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চুয়াডাঙ্গা জেলায় বৃহৎ ডুগডুগি, শিয়ালমারি পশুর হাটসহ মোট ১১টি পশুর হাট রয়েছে। পবিত্র ঈদুল আজহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ডুগডুগি, শিয়ালমারি, আলমডাঙ্গা, সরোজগঞ্জ পশুর হাটগুলো জমজমাট হয়ে ওঠে। পশুর হাটগুলো শুরু হওয়ার সাথে সাথেই প্রায় প্রতি বছরই অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টির প্রতারণাসহ বিভিন্ন ধরণের অপরাধমূলক কাজের দৌরাত্ম বেড়ে যায়। এছাড়াও পরিবহনগুলোতেও বাসের যাত্রীবেশী অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা টার্গেট করে সাধারণ যাত্রীদের অজ্ঞান করে তাদের কাছ থেকে নগদ টাকাসহ মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নেয়। চুয়াডাঙ্গা জেলায় গত ১৬ মে ফরিদপুরের ইউনুস শেখ শিয়ালমারি পশুহাটে, ২৩ মে জীবননগর-কালীগঞ্জ সড়কের পশু হাসপাতালের সামনে সানোয়ার হোসেন (৪৫), ৩০ মে আলমডাঙ্গার শমসের আলী শিয়ালমারি হাটে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েন। সবশেষ অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা গত ৩ জুন ডুগডুগির হাটে নোয়াখালীর জসিম উদ্দিনকে টার্গেট করে চেতনানাশক পুষ করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাকালে হাতেনাতে বাগেরহাটের বাচ্চু মাঝি নামের একজন গ্রেপ্তার হয়। এই ঘটনায় দামুড়হুদা থানায় পরদিন একটি মামলা রুজু হয়। এরপর অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের ধরতে চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার আর.এম ফয়জুর রহমান (পিপিএম সেবা)এর দিক নির্দেশনায় সাধারণ মানুষের ঈদ উদযাপনকে নির্বিগ্ন ও উৎসব মূখর করতে এবং সাধারণ মানুষ যাতে অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি প্রতারক শ্রেণির অপরাধিদের দ্বারা সর্বস্বান্ত না হয়। অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে মৃত্যুর ঘটনা বিরল নয়। কোন ধরণের জীবনহানি যাতে না ঘটে ইত্যাদি বিভিন্ন কাযর্ক্রমকে সামনে রেখে একটি নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রস্তুত করেন। নিরাপত্ত পরিকল্পনায় প্রতিটি পশুর হাটে, বড় বড় শপিং মল, বাসষ্ট্যান্ড, রেলস্ট্শেন এলাকায় পোশাকধারী পুলিশের ডিউটির পাশাপাশি সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা পুলিশ নিয়োগ করে এসব অপরাধিদের ফাঁদ পেতে ধরার নির্দেশনা প্রদান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় একাধিক টিম কৌশলে ফাঁদ পাতে। সেই ফাঁদে আটকা পড়ে অজ্ঞান পার্টির সক্রিয় ৬ সদস্য।