নরসিংদীতে শেখ হাসিনা সেতু সংলগ্ন মেঘনার তীরবর্তী এলাকা এখন বিষাদ হয়ে উঠেছে স্থানীয়দের মাঝে। মেঘনা নদীর ও বিনোদন কেন্দ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে ঘুরতে আসা দূরদুরান্তের দর্শনার্থীরা প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।সদর উপজেলার নরজরপুর ইউনিয়নে অবস্থিত দড়িনবীপুর ও নাগরিয়াকান্দি নামে পরিচিত এই দর্শনীয় স্থানে একটি রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন আল-নোমান (১৭), সৈকতসহ (১৬) অজ্ঞাত এক কিশোরী। এই ঘটনায় মঙ্গলবার(৭ নভেম্ব) রকি,রমজান,শুভ নামে তিন জনকে গ্রেফতার করে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। গত শুক্রবার সকালের নির্যাতনের ঘটনার একটি ভিডিও সোমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে তা প্রকাশ্যে আসে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সদর মডেল থানার ওসি আবুল কাশেম ভূইয়া। নির্যাতনের শিকার কিশোর আল নোমান সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের ভেলানগর নন্দিপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। তার বাবা সৌদিপ্রবাসী লুৎফর রহমান। নোমান স্থানীয় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির ছাত্র। নির্যাতনের শিকার তার সহপাঠী সৈকত একই এলাকার বাসিন্দা। তাদের স্বজনদের দাবি, বন্ধুদের নিয়ে নাগরিয়াকান্দি বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরতে গেলে ওই চক্রটি নির্যাতন করে মোটা অঙ্কের টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। নির্যাতনের শিকার আল-নোমান জানান, আল-রোমানসহ তার সহপাঠী সৈকত ও আরেক মেয়ে বন্ধু নিয়ে বেড়াতে যায় শেখ হাসিনা সেতু সংলগ্ন বিনোদন কেন্দ্রে। সেখানে নিসর্গ হাওয়া নামে একটি রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে বসেন তারা। হোটেলে থাকা লোকজন তার বান্ধবীকে আটকে রাখে। পরে তাকে হোটেল থেকে পাশে নির্জনস্থানে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে। এ সময় তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। একজন তার বাবার নাম জানতে চাইলে বলে তার বাবা বিদেশে থাকে। পরে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে চক্রটি।আল-নোমান আরও জানান, টাকা আনার কথা বলে চাচা হাবিবুর রহমান হাবিবের সঙ্গে কথা বলে সে। পরে কৌশলে ঘটনাস্থলে এসে তাদের উদ্ধার করে হাবিব। চক্রের সদস্যরা বিষয়টি কাউকে জানালে প্রাণে মেরে ফেলার ভয়ভীতি দেখায় ভুক্তভোগীদের।এ বিষয়ে হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, প্রাণের ভয়ে পুলিশকে জানানো হয়নি। পরে বিস্তারিত জানাচ্ছি বলে মুঠোফোন কেটে দেন তিনি।নজরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সেতু সংলগ্ন বাজার কমিটির সভাপতি বাদল সরকার বলেন, ভিডিওটি থানা থেকে দিয়ে বলেছে দেখার জন্য। আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি নিসর্গ হাওয়া নামে হোটেলের মালিক প্রীয় ও ইমন এই ঘটনায় জড়িত। আমরা বাকিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।এ বিষয়ে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কেএম শহিদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ঘটনার ভিডিও দেখে ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করেছেন। এ ঘটনায় জড়িত নিসর্গ হোটেলের লোকজন হোটেল বন্ধ করে পালিয়ে গেছে। তবে তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।