আসন্ন দূর্গাপূজা উপলক্ষে সিরাজগঞ্জের ভদ্রঘাটপাল পাড়ায় প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা। খড়, কাঠ, সুতা আর মাটি দিয়ে নিপুণ হাতে তৈরি করছেন প্রতিমা। পূজা যতই ঘনিয়ে আসছে, শিল্পীদের ব্যস্ততা ততটাই বাড়ছে। এর মধ্যেই অনেকেই প্রতিমা তৈরির অর্ডার (ফরমায়েশ) নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। দিলীপ পাল বলেন, ‘প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম ও চাহিদা বাড়লেও বাড়েনি প্রতিমার দাম। তবে চলতি বছর প্রতিমার চাহিদা গত বছরের তুলনায় বেশি।’ হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃস্টান ঐক্য পরিষদের সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা সভাপতি অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আগামী ১ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে এবারের দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এবাবের দুর্গোৎসব। চলতি বছর দেবী দুর্গা আসছেন শিবের বাসস্থান কৈলাস থেকে গজে (হাতি) করে, যাবেন নৌকায়। দেবীর আগমনে বিশ্ব হবে শান্তিময়, অশুভ শক্তিকে বিনাশ করে উদয় হবে শুভ শক্তির এমনটাই প্রত্যাশা তাদের। এর মধ্যেই কোনো কোনো এলাকায় প্রতিমাতে রং তুলির কাজ চলছে।’ জেলার কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট পালপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, পালপাড়ায় প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। যেন দম ফেলার সময় নেই প্রতিমা তৈরির শিল্পীদের। পুরুষদের পাশাপাশি প্রতিমা তৈরির কাজে সহায়তা করছে বাড়ীর নারী ও শিশুরা। কেউ কেউ খড়, কাঠ, সুতা দিয়ে প্রতিমার কাঠামো তৈরি করছেন কেউবা নিপুণ হাতে ফুটিয়ে তুলছেন দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী প্রতিমা। প্রতিমার কাঠামো তৈরি শেষে এখন চলছে মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির মূল কাজ। এরপর প্রতিমা শুকানোর পর কেউ কেউ শুরু করেছে প্রতিমায় রঙের কাজ। ভদ্রঘাট পালপাড়ার প্রতিমা তৈরির কারিগর শ্রীকান্ত পাল বলেন, আগের মতো মানুষ মাটির তৈরি জিনিসপত্র ব্যাবহার না করায় আমাদের প্রায় সারা বছরই অলস সময় কাটাতে হয়। তবে দুর্গাপূজা চলাকালীন প্রতিমা তৈরি করে যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে কোনো মতে সারা বছর সংসার চালাই। আবার চলতি বছর প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। কিন্তু ক্রেতারা প্রতিমার দাম বাড়াচ্ছে না। এতে আমাদের যে টাকা আয় হওয়ার কথা তা আর হচ্ছে না। প্রতিমা কারিগররা জানান, চলতি বছর এখানে দুই শতাধিক প্রতিমা তৈরি হচ্ছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে এই প্রতিমাগুলো পাবনা, বগুড়া, নাটোর, টাঙ্গাইলসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় যাবে। সনিজিব পাল বলেন, ‘এখানে তৈরি প্রতিটি প্রতিমা ১২-৮০ হাজার টাকা মূল্যের প্রতিমা তৈরি হচ্ছে।’ অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘সনাতন ধর্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপুজা আগামী ২০ অক্টোবর মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে এবং ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচদিনব্যাপী এই উৎসবের। দেবীর এবার আগমন ও গমন ঘোটকে (ঘোড়ায়) যার ফল ছত্রভঙ্গ অর্থাৎ পৃথিবী এবার অনেকটা অস্থির ও বিশৃঙ্খল থাকবে।