আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করা গেলে সমাজ সমৃদ্ধ হবে বলে মনে করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘অনেক সংকটও যদি আমাদের গ্রাস করে তখন আইনের যথাযথ প্রয়োগই একমাত্র ক্ষেত্র যা সমাজ বা রাষ্ট্রকে সঠিক ধারায় আনার জন্য সবচেয়ে বড় টুলস। কখনো কখনো মনে হয়, সমাজের মধ্যে মায়ের চোখ রাঙানি সবচেয়ে বড় যা আইনের চেয়েও শ্রেষ্ঠতর। মায়ের ওই চোখ রাঙানির মধ্যেও যে ভাষা আছে সেটি যদি অনুধাবন করা যায় তাহলে বোধ করি আইন মাতৃস্নেহের মধ্য দিয়েও গড়ায়। রাষ্ট্র সেভাবে করেই মানুষকে শাসন, অনুশাসন, ভালোবাসায় ঋণী করে জাতীয়তাবাদী ভাবনার চমৎকার উন্মেষ ঘটায়।’
আজ বুধবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানটের মিলনায়তনে অ্যামপাওয়ারমেন্ট থ্রো ল অব দ্য কমন পিপল (এলকফ) আয়োজিত ‘তৃতীয় প্রফেসর শাহ আলম কন্সটিটিউশনাল ল এসে কমপিটেশন ২০২৩’ এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য ড. মশিউর রহমান।
দেশের প্রথিতযশা এই সমাজবিজ্ঞানী বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইনের বহু কলেজ নিয়ে কাজ করে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় এবং আইন চর্চার আরো বেশি প্রসারে এলকফের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আমরা চাই এলকফের সঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে ওয়ার্কশপসহ নানাবিদ কার্যক্রম পরিচালনা করুক। যাতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত আইন কলেজগুলো আরও বেশি শাণিত হয়। কলেজগুলো যেন আরও বেশি আইনের উৎকর্ষতা অর্জনে সক্ষমতা অর্জন করতে পারে। এই কলেজগুলোর অ্যাকাডেমিক এক্সিলেন্সির জন্য এলকফ কাজ করলে সকল ধরনের সহযোগিতা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় করবে।’
প্রয়াত অধ্যাপক শাহ আলমকে স্মরণ করে তার জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করে ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘একজন মানুষ এতটা সদালপী, নিবেদিত প্রাণ, সজ্জন, শিক্ষকসুলভ, মার্জিত, রুচিশীল হতে পারেন যেটি মনে দাগ কেটে যায়। তিনি মুক্ত মনের, মুক্তবুদ্ধির সাহসী মানুষ ছিলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌলবাদের যে অবস্থান ছিল সেই জায়গায় তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে প্রগতিশীল, মুক্তিবুদ্ধি চর্চার পক্ষে তার অবস্থান ছিল বরাবরই সাহসী। তিনি চেতনার জায়গায়, উৎকর্ষতার জায়গায় অনন্য ছিলেন। সেকারণে অধ্যাপক শাহ আলম একটি উজ্জ্বল নাম। তিনি আমাদের মঝে সব সময় স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ, ব্যারিস্টার তাপস, ড. এস এম মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ। প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় ১০ জনকে নির্বাচিত করা হয়। আর তিনজনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।