সাম্প্রতিক সময়ে এমএলএম কোম্পানীর নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ভুক্তভোগীদের ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, পিরোজপুরসহ বেশ কয়েকটি জেলায় মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমেও বর্ণিত প্রতারণার ঘটনা প্রচারে দেশব্যাপী চাঞ্চল্য ও আলোড়নের সৃষ্টি হয়। বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট অভিযোগ দায়ের করেন। ফলশ্রুতিতে র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে ও গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার আনুমানিক ১৮:৩০ ঘটিকায় র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন আব্দুর এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে চাকরির প্রলোভনসহ অভিনব পন্থায় বিপুল অর্থ আত্মসাৎকারী সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ ০৪ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলো ১। মোঃ ফজলুল হক (৫৬), পিতা-মৃত খোদা বক্স খলিফা, জেলা-কুষ্টিয়া, ২। মোঃ হুমায়ন কবির (৪৪), পিতা-আতিয়ার রহমান, জেলা-ফরিদপুর, ৩। আবু সাইম রিয়াজ (৩২), পিতা-আবু জাফর খোকন, জেলা-শরীয়তপুর ও ৪। মামুনুর রশিদ (২৪), পিতা-মোঃ আলী আজম, জেলা-কুষ্টিয়া জেলা-ঢাকা’দের গ্রেফতার করে। এসময় তাদের নিকট থেকে ৭২টি বিভিন্ন নামীয় নিয়োগপত্র, ০১টি টাকা গ্রহণ রশিদ বহি, ০১টি সিপিইউ, ০১টি মনিটর, ০১টি প্রিন্টার, ০১টি মাউস, ০১টি কী-বোর্ড, ০৫টি বিভিন্ন ক্যাবল, ০৪টি বই, ০১টি পাসপোর্ট, ০১টি এটিএম কার্ড, ০৯টি মোবাইল ও নগদ-১,০০০/- (এক হাজার) টাকা উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত ফজলুল হক উক্ত প্রতারক চক্রটির মূলহোতা। সে একটি নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পরিচয়ে দেশের প্রতিটি জেলার প্রতিটি থানায় উক্ত প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার, পরিদর্শক, উপ-পরিদর্শকসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জামানত বাবদ জন প্রতি ২০ হাজার টাকা করে নিত। এসব নিয়েগের ক্ষেত্রে সে উক্ত থানা এলাকার স্থানীয় বিভিন্ন সরকারী অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং চাকুরী সন্ধানী বিভিন্ন সুনামধন্য ও বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের বাছাই করত যাতে করে স্থানীয় সরকারী/বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রবেশে কোন অসুবিধা না হয়। অতঃপর উক্ত প্রতারক চক্রের মূলহোতা ফজলুল হক ও তার অন্যান্য সহযোগীরা মিলে প্রত্যেক থানায় একজন সুপারভাইজার ও উক্ত সুপারভাইজার এর অধীনে ৩ জন করে পরিদর্শক এবং এক জন পরিদর্শক এর অধীনে ০৫টি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে লোভনীয় অফার এর মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের দায়িত্ব বণ্টন করত। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করতঃ সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।