আসন্ন খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি)’র নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার পদপ্রার্থী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক গতকাল দুপুরে খুলনা প্রেসক্নাবের ব্যাংককুইট সম্মেলন কক্ষে ৪০ দফা নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেন। ইশতেহারে তিনি জলাবদ্ধতা দূরীকরণে বিশেষ ব্যবস্থা, পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব নগর গড়া এবং স্মার্ট খুলনা গড়ার পাশাপাশি মহানগরী সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে ইশতেহারে বিশেষ গুরুত্ব দেন। মঙ্গলবার (৬ জুন) দুপুর ১২টায় খুলনা প্রেসক্লাবের শহীদ শেখ আবু নাসের ব্যাংকুয়েট হল মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি এ ইশতেহার ঘোষণা করেন। এ সময়ে মেয়র পদপ্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক ঘোষিত ইশতেহারের ৪০ দফায় তিনি বলেন পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও পরিবেশবান্ধব খুলনা, পার্ক-উদ্যান নির্মাণ ও বনায়ন সৃষ্টি, জলাবদ্ধতা দূরীকরণের বিশেষ ব্যবস্থা, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ড্রেন পরিষ্কার, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বৃক্ষ পরিচর্যা ও সংরক্ষণ, স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন ও নিরাপদ স্বাস্থ্যকর খুলনা গড়া, সুলভ মূল্যে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা, সূর্যোদয়ের আগেই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, মাদকমুক্ত নগর গড়ে তোলা, সড়কে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, পথচারীবান্ধব ফুটপাত, মানবিক উন্নয়নের খুলনা, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান উপযোগী নগরী,সিভিক সেন্টার গড়ে তোলা, অনুদান তহবিল চালু, মিডিয়া সেন্টার চালু ও সেরা সংবাদ পুরস্কার প্রবর্তন, কবরস্থান ও শ্মশার ঘাটের উন্নয়ন, মসজিদ, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতি বছর প্রতিযোগিতার আয়োজন, স্মার্ট ও ডিজিটাল খুলনা গড়া, নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মানচিত্র প্রদর্শন, অংশগ্রহণমূলক ও সুশাসিত খুলনা গড়া, ওয়ার স্টপ ক্রাইসিস মিটিগেশন সেল স্থাপন, হটলাইন ও নগর তথ্যকেন্দ্র চালু, পরিকল্পনা প্রণয়নে পরামর্শক কমিটি গঠন, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের উন্নয়ন ও বিকাশ ঘটানো, জলাশয় ও পুকুরগুলো সংরক্ষণ, শিশুদের সাঁতার শেখানোর বিশেষ উদ্যোগ, নগরীর বাজারগুলো আধুনিকায়ন, হোল্ডিং ট্যাক্স না বাড়িয়ে সেবার মান বৃদ্ধি, মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে রাস্তার নামকরণ, বধ্যভূমিগুলোর স্মৃতি সংরক্ষণ, যাতায়াত ও ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, নারী উন্নয়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা কামনা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ, ওয়াসা, কেডিএ, রেলওয়ে, টেলিকমিউনেকেশন ও বিদ্যুৎ পরিসেবা উন্নয়ন, কেসিসি’র স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, উন্নয়ন কার্যক্রম বুলেটিন প্রকাশ, খুলনা মহানগরীর সম্প্রসারণে উদ্যোগ গ্রহণসহ ইশতেহারে বিশেষ ঘোষণা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব প্রদানকালে তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে ৮০০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি। এর মধ্যে কিছু প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হয়েছে এবং বাকি গুলি ইনঃ নির্বাচিত হলে সেগুলি তড়িৎ গতিতে বাস্তবায়নের পরিকল্পনায় রয়েছে। এসব কাজ শেষ হলে আর জলাবদ্ধতা থাকবে না। বিগত সময়ে করোনায় সময়ে উক্ত কাজ গুলি সমাপ্ত করতে বিঘ্নিত হয়েছিল। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আরও বলেন আমি যদি দুর্ণিতিবাজ হই তাহলে খুলনার মানুষ যেন আমাকে ভোট না দেয়। আর যদি খুলনা উন্নয়ন করে থাকি তাহলে আশা করি আমি জয়যুক্ত হব এটা আমার বিশ্বাস। এছাড়া যদি কোন প্রার্থী মাদকসেবী কিংবা মাদক ব্যবসায়িদের গডফাদার হয়ে থাকে তাহলে তাকেও সিটি নির্বাচনে ভোট না দেওয়া আহবান জানান তিনি। উক্ত ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক ও এস এম কামাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পারভীন জাহান কল্পনা, কেসিসি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক কাজী আমিনুল হক,নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, এডভোকেট সুজিত কুমার অধিকারী, সাবেক সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজান, আশরাফুল ইসলাম, শহিদুল হক মিন্টু, মুন্সী মাহাবুবুল আলম সোহাগ, এ্যাডঃ সাইফুল ইসলাম, জাতীয় মহিলা সংস্থার খুলনার চেয়ারম্যান রুনু ইকবাল বিথারসহ ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া কর্মীবৃন্দরা এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন।