ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের পক্ষে পিপিআই (প্রোগ্রাম ফর পারফরম্যান্স ইম্প্রুভমেন্ট) প্রকল্প পরিচালনা কমিটির নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাব থেকে অবৈধভাবে ২৪৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সংস্থাটির সাবেক রাজস্ব কর্মকর্তাসহ তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বুধবার সকালে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ মামলাটি দায়ের করেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমান। মামলার আসামিরা হলেন-ঢাকা ওয়াসার সাবেক রাজস্ব পরিদর্শক এবং পিপিআই প্রকল্প পরিচালনা পর্ষদের কো-চেয়ারম্যান মিঞা মো. মিজানুর রহমান,সাবেক রাজস্ব পরিদর্শক ও পিপিআই পরিচালনা পর্ষদের সাবেক অফিস ব্যবস্থাপক মো. হাবিব উল্লাহ ভূঁইয়া ও ঢাকা ওয়াসার জোন-৬ এর কম্পিউটার অপারেটর (আউটসোর্সিং) মো. নাঈমুল হাসান। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার এজহারে বলা হয়, আসামিরা ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সময়ের মধ্যে অসৎ উদ্দেশে পরস্পর যোগসাজসে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের পক্ষে পিপিআই পরিচালনা কমিটির নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাব থেকে অবৈধভাবে অর্থ উত্তোলনের মাধ্যমে মোট ২৪৮ কোটি ৫৫ লাখ ২২ হাজার ৯০০ টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সময়ের মধ্যে সেবা গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক পিপিআই প্রকল্পের বিল বাবদ মোট ৩৫৪ কোটি ১৬ লাখ ৬৯ হাজার ৪২৯ টাকা টাকা জনতা ব্যাংক লিমিটেডর, কারওয়ান বাজার কর্পোরেট শাখার চলতি হিসাব নম্বর- ০১০০০০০৪০২০৬৫ এর মাধ্যমে বর্ণিত সমিতিকে প্রদান করে বলে এজহারে উল্লেখ করা হয়। দুদকের অনুসন্ধান মামলার প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত সময়ে ঢাকা ওয়াসার প্রদান করা টাকার বিপরীতে, বর্ণিত সময়ের স্টেটমেন্ট, উক্ত সময়ের অডিট রিপোর্ট, সমিতির কেনা অন্যান্য সম্পদ রেজিস্টার, পিপিআই প্রকল্পে কর্মরত কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও বোনাস, সমিতির সদস্যদের প্রদানকৃত ডিভিডেন্ট, ব্যাংকের সার্ভিস চার্জ, আসবাবপত্র ক্রয়, যানবাহন ক্রয়, স্থাপনা বাবদ ব্যয়ের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায় ৯৫ কোটি ১ লাখ ৮৮ হাজার ৭১৫ টাকা ব্যয়ের রেকর্ড পাওয়া যায়। এছাড়াও ওই সময়ে ব্যাংক হিসাবটিতে স্থিতি ছিল ১০ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার ৮১৪ টাকা। মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটি, পিপিআই পরিচালনা পর্ষদ এবং ব্যাংক হিসাব পরিচালনাকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা ব্যয়ের হিসাব বা খাত উল্লেখ বা প্রমাণ অনুসন্ধানকালে দেখাতে পারেননি। ফলে মোট ২৪৮ কোটি ৫৫ লাখ ২২ হাজার ৯০০ টাকা আত্মসাৎ হয়েছে।