র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে মাদক, অস্ত্র, জঙ্গিসহ বিভিন্ন ধরণের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর শাহজাহানপুরে টিপু হত্যা,বহুল আলোচিত বিশ^জিৎ হত্যা, পলাতক মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত বাউল মডেলসহ বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন ও বিভিন্ন মামলায় দীর্ঘদিনের পলাতক আসামিদের প্রতিনিয়ত আইনের আওতায় নিয়ে আসার মাধ্যমে সর্বস্তরের জনগণের প্রশংসা ও আস্থা অর্জন করেছে। এছাড়াও বিগত ০৬ মাসে মাসে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত, যাবজ্জীবন ও বিভিন্ন সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের বিরুদ্ধে ১৮৮ টি অভিযান পরিচালনা করে ০৫ জন একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিসহ সর্বমোট ১৮৯ জন আসামি গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার র্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন চন্দ্রা এলাকা হতে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত এবং দীর্ঘদিন যাবৎ পলাতক যুদ্ধাপরাধী মোঃ মোন্তাজ আলী ব্যাপারী @ মমতাজ (৭৬), পিতা-মৃত শমেশ উদ্দিন ব্যাপারী, সাং-নান্দিনা, থানা-গাইবান্ধা সদর, জেলা-গাইবান্ধা’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। ধৃত আসামিসহ মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধের একই মামলার পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা ১৯৭১ সালে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ০৪ টি অভিযোগই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। ১৯৭১ সালে গঠিত জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক ঘোষিত তালিকা মোতাবেক ধৃত আসামি মমতাজ জামায়াতে ইসলামীর গাইবান্ধা সদর এর সক্রিয় সদস্য ছিল। উক্ত মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আরেক আসামী আব্দুল জব্বার গাইবান্ধা সদর এলাকার শান্তি কমিটি এবং সশস্ত্র রাজাকার বাহিনীর প্রধান সংগঠক ছিল। জব্বারের সাথে যোগসাজসে ধৃত মমতাজ শান্তি কমিটির সক্রিয় সদস্য হিসেবে অত্র এলাকায় লুটপাট ও বিভিন্ন ধরনের নাশকতামূলক কার্যক্রম চালাত। ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান মামলার শুনানিতে হাজিরা না দেওয়ায় ধৃত মমতাজ এর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। এর পরপরই মমতাজ তার নিজ বাড়ি ছেড়ে গাইবান্ধা সদরে তার জামাতার বাড়িতে আত্মগোপন করে। সেখান হতে প্রায়ই স্থান পরিবর্তন করে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈরে তার বড় ছেলে শফিকুল ইসলামের ভাড়া বাসায় আসা যাওয়া করত। তার ছেলের ভাড়া বাসাটি নিজ জেলা হতে দূরবর্তী হওয়ায় সেখানে বেশি নিরাপদ ভেবে পরবর্তীতে ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের দিকে স্থায়ীভাবে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানাধীন চন্দ্রা এলাকায় ছেলের বাসায় বসবাস করতে থাকে। সেই বাসা হতেই গতরাতে র্যাব কর্তৃক গ্রেফতার হয় এই যুদ্ধাপরাধী। গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।