হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি চা-বাগানে ঘুরতে যাওয়া প্রেমিক যুগলকে আটক করে চাঁদা দাবীর অভিযোগে নারীসহ ৩ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, পাইকপাড়া ইউনিয়নের হলহলিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল শহীদের পুত্র বাচ্চু মিয়া (৫২), গনেশপুর গ্রামের মৃত ডা. আব্দুর রশিদের পুত্র মো. আব্দুল মালেক (৪৩), দেউন্দী বস্তী এলাকার শাহজাহান মিয়ার স্ত্রী অলিমা আক্তার (২৬)। মঙ্গলবার বিকেলে তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। এর আগে দুপুরে ইন্সপেক্টর( তদন্ত) গোলাম মোস্তফা এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করেন। এ সত্যতা নিশ্চিত করে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) গোলাম মোস্তফা জানান, ২৪ এপ্রিল বিকাল সাড়ে ৪টায় চুনারুঘাট থানাধীন ৪ নং পাইকপাড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত পার্শ্ববর্তী দেউন্দি চা-বাগানের চা সেকশনের ভিতরে মোঃ মাসুদ মিয়া তার প্রেমিকা তাসলিমা আক্তারকে নিয়ে দেউন্দি চা-বাগানে ঘুরতে যায়। তাদেরকে বাগানে পেয়ে কতিথ সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী প্রতারক বাচ্চু মিয়া সহ তার সঙ্গীরা নিজেদেরকে মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক পরিচয় দেয় এবং তাদের কাছে আসিয়া তাদের পরিচয় জানতে চায়। এ সময় মাসুদ মিয়া ও তাসলিমা আক্তার তাদের ভয়ে তাহারা স্বামী-স্ত্রী বলিয়া পরিচয় দেয়। তখন বাচ্চু মিয়া তাদেরকে ভূয়া স্বামী-স্ত্রী বলে তাদেরকে ভয়ভীতি দেখাইয়া জোর পূর্বক বাচ্চু মিয়ার বসত বাড়ীতে তাহার বসত ঘরে নিয়া আটক করে রাখে এবং তাদের কাছে প্রথমে ৫ হাজার পরে ১৫ হাজার টাকা দাবী করে। এপ্রেক্ষিতে তারা দুই হাজার টাকা প্রদান করেন। এ ঘটনায় মাসুদের বাবা বাদী হয়ে চুনারুঘাট থানায় ৪ জনের নামে মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুটি মোবাইল ও নগদ ২ হাজার টাকাসহ ওই তিন জনকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে একজন পলাতক রয়েছে। ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, মালেক ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে কখনো সাংবাদিক আর কখনো মানবাধিকার কর্মী পরিচয় দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করে সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে অসৎ উপায়ে টাকা উপার্জন করতেন। এদিকে চুনারুঘাটসহ হবিগঞ্জ জেলায় ভুয়া মানবাধিকার কর্মি আর ভূয়া সাংবাদিক’দের দৌরাত্ম্য অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে চরমে পৌঁছেছে। ভুয়া সাংবাদিকেরা বিভিন্ন প্রতারণার ফাঁদ পেতে এবং তথাকথিত মানবাধিকার সংগঠনের সদস্য-সমর্থকরা নিজেদেরকে ‘মানবাধিকার সাংবাদিক’ পরিচয় দিয়ে নিরীহ লোকজনকে নানাভাবে হয়রানি করছে বলেও এন্তার অভিযোগ উঠেছে। সাংবাদিক পরিচয়ে এরা ছিনতাই, চাঁদাবাজি, জমি দখল, দোকানপাট দখল, ধর্ষণ, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্মে জড়িত হয়ে পড়ছে। এই চক্রে বিতর্কিত নারী সদস্যও থাকেন। এরা মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে ‘প্রেস’ কিংবা ‘সংবাদপত্র’ লিখে পুলিশের সামনে দিয়েই নির্বিঘ্নে দাবড়ে বেড়ায়। এদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও বিভিন্ন যানবাহনও থাকে চোরাই এবং সম্পূর্ণ কাগজপত্রবিহীন। ভূয়া সাংবাদিক আর কথিত মানবাধিকার কর্মিদের নানা অপকর্মের কারণে প্রকৃত পেশাদার সাংবাদিকদের ভাবমূর্তি এখন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।