ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বিতরণের জন্য পাবনা থেকে সাঁথিয়া ও আতাইকুলায় নিয়ে যাচ্ছিল নগদের দুই মাঠকর্মী। পথে ছিনতাইয়ের ঘটনায় সব টাকা খুইয়েছেন, এমন নাটক সাজিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। ছিনতাইয়ের পরিকল্পনাকারী নগদের দুই মাঠকর্মীসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র-গুলি, ছুড়ি ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাবনা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) আকবর আলী মুনসী। গ্রেপ্তাররা হলেন পাবনা শহরের চকপৈলানপুর (নয়নামতি) এলাকার আহম্মদ উল্লাহ রুমির ছেলে মো. শিস ইসলাম (২২), শালগাড়িয়া এলাকার মো. বানির ছেলে মো. ইয়াছিন আলী ওরফে রাহাত (২১), শালগাড়িয়ার নিকারীপাড়ার আব্দুল বারেকের ছেলে মো. রায়হান হোসেন (২১), ইব্রাহীম আলী মুন্সির ছেলে মো. ইমন হোসেন বাঁধন (২৪), রজব আলীর ছেলে তানভীর হোসেন (২১), শালগাড়িয়া উত্তরখাপাড়ার মো. মাসুম হোসেনের ছেলে মো. রনি হোসেন (২২), হেমায়েতপুরের পাককিয়ার মো. মোশারফ হোসেনের ছেলে মো. ইমরান শেখ (২৪) এবং পৌর এলাকার বড়দিকশাইল স্কুলপাড়ার উজ্জ্বল হোসেনের ছেলে তুহিন হোসেন (২৭)। আকবর আলী মুনসী জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৫ এপ্রিল অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, শিস ইসলাম নগদকর্মী তুহিন এবং ইমরান শেখের সঙ্গে সপ্তাহখানেক পূর্বে ঘটনার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দিন ১৪ মার্চ সকালে তারা লোকেশন সরবরাহ করে। নগদকর্মী তুহিনের সঙ্গে শিস ইসলামসহ অন্য আসামিরা মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করা থেকে বিরত থাকে। উদ্দ্যেশ্য তুহিনের কোনোভাবেই যেন সন্দেহ না হয়। পরিকল্পনা মোতাবেক নগদকর্মী তুহিন ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে রওনা দিলে পূর্ব থেকে পাবনার যুব উন্নয়নের সামনে অবস্থানকারী শিস ইসলামসহ তার সঙ্গে থাকা রাহাত ও রায়হানকে অপর নগদকর্মী ইমরান মোবাইলের মাধ্যমে লোকেশন দেয়। তার দেওয়া তথ্য মতে তুহিন যুব উন্নয়নের সামনে দিয়ে যাওয়ার পরপরই শিস ইসলাম, রাহাত ও রায়হান একটি মোটরসাইকেলে এবং তানভির ও বাঁধন অন্য একটি মোটরসাইকেলে তাদের পিছু নেয়। একপর্যায়ে ঘটনাস্থল মাধবপুর হাইওয়ে থানার সামনে পৌঁছালে অস্ত্র ঠেকিয়ে তুহিন এবং তার সঙ্গে থাকা নগদকর্মী ইয়াকুব ইসলাম বিশালের কাছে থাকা ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। পুলিশ সুপার জানান, পরিকল্পনা মোতাবেক শিস ইসলাম, রাহাত ও রায়হান পথ পরিবর্তন করে ভেতরের রাস্তা দিয়ে চলে যায় এবং বাঁধন ও তানভির মহাসড়ক দিয়ে পুনরায় পাবনার দিকে যায়। পরবর্তীতে তারা আতাইকুলা থানার শ্রীপুর বাজারের পাশে একটি ধান ক্ষেতে এসে মিলিত হয় এবং ছিনতাইকৃত টাকা ভাগাভাগি করে। ছিনতাইয়ে সরসারি অংশগ্রহণকারী মোটরসাইকেল আরোহী তিনজনসহ মোট চারজন নিজেদের জড়িয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে দুদিনের রিমান্ডে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ-প্রশাসন) মো. মাসুদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জিয়াউর রহমান, ডিবির ওসি এমরান মাহমুদ তুহিন, আতাইকুলা থানার ওসি হাফেজ উদ্দিনসহ পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।