ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল নয়, এই আইন সংশোধন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজনীয়তা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক সময় এই আইনের মাধ্যমে হয়রানির অভিযোগ উঠছে। প্রয়োজন হলে আইনের বিধি সংযুক্ত বা পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
রোববার (২ এপ্রিল) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত সেমিনার শেষে এসব কথা বলেন তিনি। ‘বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে আরবিট্রেশন আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার’ শীর্ষক এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
গত ২৬ মার্চ প্রথম আলোতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন ও পোস্টার কার্ড প্রচার করা নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। যা নিয়ে পত্রিকার সাভার প্রতিনিধির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। পরে তাকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। এই ঘটনায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে।
রোববার বিষয়টি নিয়ে করার এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, প্রথম আলোর সম্পাদক ও পত্রিকাটির এক নিজস্ব প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে করা মামলার বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, সরকার দেশের কোনো গণমাধ্যম বা সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করেনি। মামলা হয়েছে অন্যায় ও অপরাধের বিরুদ্ধে।
মন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বিশ্বের সব দেশে আছে। কিন্তু সেখানে হয়তো সরাসরি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বলা নেই। ডিজিটাল অপরাধ কমাতে এ আইন করেছে সব দেশ।’
দেশে অনেক সময় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মাধ্যমে হয়রানির অভিযোগ এসেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রয়োজন হলে আইনের বিধি সংযুক্ত করা বা পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের প্রয়োজনীয়তা আছে। গত ১৪ মার্চ এ বিষয়ে সুধীজনদের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে। এই আইনে সাংবাদিকদের যাতে অহেতুক হয়রানি করা না হয়, সে বিষয়ে একটা পদ্ধতি গ্রহণ করা (উদ্যোগ নেওয়া) হয়েছে।
আনিসুল হক বলেন, ‘সুধীজনদের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে। এ বিষয়ে ৩০ মার্চ আবারও বসার কথা ছিল, তবে তা স্থগিত করা হয়। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পুনরায় বসা হবে। সুধীজনরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ডাটা প্রটেকশন আইন এবং এনজিও ভলেন্টারি নিয়েও একটা আইনের কথা বলেছেন। এসব নিয়েও আলোচনা হবে।’
দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদকের আগাম জামিন শুনানিতে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চের অপরাগতা প্রকাশের বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, বিচার বিভাগ নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না, বলা ঠিকও হবে না। তবে বঙ্গবন্ধুর হত্যা মামলার শুনানিতে সাতটি বেঞ্চ অপরাগতা প্রকাশ করেছিল। আইনমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে-বিদেশে বা জাতিসংঘে আলোচনায় এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কিছু অপব্যবহার হয়েছিল, সেটা আমরা স্বীকার করে এ বিষয়ে কী পরিবর্তন আনা যায় সেটা নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আলোচনা এখনও চলমান আছে। সেখান থেকে একটা টেকনিক্যাল নোট এসেছে, আমরা সেটা নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা করছি।’