র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সাবির্ক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী, অপহরন ও হত্যাসহ বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর মামলার আসামীদের গ্রেফতারে র্যাব নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র্যাব ইতিমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন মীরেরবাগ এলাকার ওরিয়েন্ট উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেনীতে অধ্যায়নরত স্কুল ছাত্র আজিজুল ইসলাম (১৮) পিতা-মাতা ও তিন ভাইয়ের সংসারে সে সবার বড়। আজিজুলের পিতা একজন দিনমজুর। তিনি রাজমিস্ত্রীর সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। অভাবের সংসারে আজিজুলও লেখাপড়ার পাশাপাশি ইজিবাইক চালিয়ে পরিবারকে সাহায্য করতো এবং তার লেখাপড়ার খরচ চালাতো। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ আজিজুল প্রতিদিনের ন্যায় ইজি বাইক নিয়ে যাত্রী পরিবহন করার জন্য বাসা থেকে বের হয়। ঐদিন রাতে সে বাসায় ফিরে না আসলে তার পরিবারের লোকজন আজিজুল এর ফোনে কল দিয়ে তার ফোন বন্ধ পায়। অতঃপর আজিজুল এর পরিবারের লোকজন চিন্তিত হয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করতে থাকে। খোঁজাখুজির একপর্যায়ে ঐদিন আনুমানিক রাত ০৯:৩০ ঘটিকায় তাদের এক প্রতিবেশী রুমা বেগম ও তার ছেলে রবিউল (১০) জানায় ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন বসুন্ধরা রিভারভিউ এলাকাস্থ একটি মোটর গ্যারেজের পিছনে অজ্ঞাত ৪/৫ ব্যক্তিরা আজিজুল’কে হত্যা করে তার ইজিবাইক ছিনিয়ে নিয়ে যায়। উক্ত সংবাদ পেয়ে আজিজুলের পরিবারের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি কলাগাছের সাথে ভিকটিমের পরিহিত সুতি কাপড়ের বেল্ট দ্বারা গলায় ফাস লাগানো অবস্থায় আজিজুলের মৃতদেহ দেখতে পায়। ঘটনার সংবাদ পেয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গমন পূর্বক আজিজুলের মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করত লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মিডফোর্ড হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। অতঃপর আজিজুলের মাতা লাইলী বেগম (৪১) তার পরিবারের সাথে পরামর্শ করত ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে দুস্যুতাসহ একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর- ৮৩, তাং- ২০/০২/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা- ৩৯৪/৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড। ইতোমধ্যে হত্যাকান্ডটি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে প্রচার করায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল চাঞ্চল্যকর ও ক্লু-লেস স্কুল ছাত্র আজিজুল হত্যাকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত আসামীদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়া তদন্ত শুরু করে।এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১০ এর উক্ত আভিযানিক দল ঘটনাস্থলের আশপাশ পরিদর্শন করে বিভিন্ন সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে যাচাই বাছাই করত বিভিন্ন মানুষের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সাহায্য ও গোয়েন্দা তথ্যের সহায়তায় উক্ত হত্যাকান্ডের ক্লু উদঘাটন করত গতকাল ০৯ মার্চ ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা ১। মোঃ সাকিব (১৯), ২। মোঃ সজীব (১৯), ৩। মোঃ আরমান (২০), ৪। মোঃ আরাফাত (১৯), ৫। মোঃ হৃদয় (২০), ৬। মোঃ সাইফুল (২২), ৭। মোঃ সজীব (২৪), ৮। মোঃ জিতু (১৯) ও ৯। মোঃ ইব্রাহীম (১৯)’কে গ্রেফতার করে।