“আরব দেশে মানব বেশে,এলো একজনা’যার পরশে লোহা ঘসলে ,হয়ে যায সোনা” “জিন্দা দেহে মুরদা বসন, থাকতে কেন পরনা, মন তুমি মরার ভাব জান না, মরার আগে না মরিলে পরে কিছুই হবে না/ আমি মরে দেখেছি, মরার বসন পরেছি, কয়েকদিন বেঁচে আছি, তোরা দেখবি যদি আয় পাগলা কানাই বলতেছি।’ এমন শত শত গানের স্রষ্টা মরমী কবি পাগলা কানাইয়ের ২১৩ তম জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষে শুক্রবার দশ মার্চ উদ্বোধন করা হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকাল ১০টায় উদ্বোধন করবেন।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন পাগলা কানাই স্মৃতি সংরক্ষণ সংসদ এর সাধারন সম্পাদক ও ঝিনাইদহ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রশীদ (এ্যাডঃ ),সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া জেরিন সহ গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ।১৯৬৮ ইংরেজী সালে)বাংলা ১৩৭৪ বঙ্গাব্দ জন্ম জয়ন্তী পালন করেন বেড়বাড়ি গ্রামের সন্তান এ্যাডভোকেট আব্দুর রশীদ। তিনি ছাত্র অবস্থায় হাতে খড়ী নেন এ মরমী কবির জন্য। জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষে কবির মাজার প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয়েছে ১০ দিন নানা অনুষ্ঠান। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে অনুষ্ঠানের শুক্রবার প্রথম দিনে কবির মাজারে পুষ্পমাল্য অপর্ণ, মিলাদ মাহফিল, লাঠিখেলা প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও পাগলা কানাই রচিত সংগীত অনুষ্ঠান। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়,জেলা প্রশাসন ও জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সহযোগিতায় পাগলা কানাই স্মৃতি সংরক্ষণ সংসদ এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। পাগলা কানাই স্মৃতি সংরক্ষণ সংসদ এর সাধারন সম্পাদক ও ঝিনাইদহ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রশীদ (এ্যাডঃ )জানান, মরমী কবি পাগলা কানায়ের ২১৩ তম জন্ম জয়ন্তী অনুষ্ঠানের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৭ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সব ধরনের প্র¯‘তি নেওয়া হয়েছে এছাড়াও ৩ দিনব্যাপী মাজার প্রাঙ্গনে মেলার আয়োজন করা হয়েছে। জানা যায়, লোক-সাধনা ও মরমী সঙ্গীতের এ কবি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পাগলাকানাই ইউনিয়নের বেড়বাড়ি গ্রামে বাংলা ১২১৬ সালের ২৫ ফাল্গুন জন্মগ্রহণ করেন এবং বাংলা ১২৯৬ সালের ২৮ আষাঢ় মুত্যবরণ করেন।জানা গেছে, ছোটবেলা থেকেই তিনি দূরন্ত ও আধ্যাত্মিক স্বভাবের ছিলেন। বাল্যকালে পিতৃহারা পাগলা কানাইয়ের ঘরে মন না টেকায় এবং অর্থের অভাবে পড়ালেখা হয়নি। তিনি মানুষের বাড়ি রাখালের কাজ করেছেন। গরু চরাতে গিয়ে ধুয়ো জারি গান গাইতেন। নিরক্ষর হলেও তার স্মৃতি, মেধা ছিল প্রখর। তিনি উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে গান রচনা করে নিজ কন্ঠে পরিবেশন করতেন। তার সঙ্গীতে যেমন ইসলাম ধর্মেরও তত্বকে প্রচার করেছেন তেমনি হিন্দু-পুরান রামায়ণ ও মহাভারত থেকেও নানা উপমায়ের প্রয়োগ ঘটিয়েছেন। এ কারণেই তার গান সর্বজনীনতা লাভ করে। তার মধ্যে বাউল ও কবিয়াল এ দুয়ের যথার্থ মিলন ঘটেছে।