দেশের সর্ববৃহৎ বিমানবন্দর রয়েছে লালমনিরহাটে। এটি এশিয়া মহাদেশেরও অন্যতম দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানবন্দর। এটি লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দনগর ও হারাটি ইউনিয়নের এক হাজার ১৬৬ একর জমি অধিগ্রহণ করে ১৯৩১ সালে তৈরি করে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার। বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্রবাহিনী এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এ বিমানবন্দরটি ব্যবহার করে। ১৯৪৫ সালে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এটি অব্যবহৃত হিসেবে জৌলুস হারাতে বসে। তবে পূর্ব পাকিস্তান থাকাকালীন ১৯৫৮ সালে স্বল্পপরিসরে বিমান সার্ভিস চালু হলেও তা বেশিদিন আলোর মুখ দেখেনি। অবহেলা আর অযত্নে পড়ে রয়েছে প্রায় ৫ দশকেরও বেশি সময় ধরে। বিমানবন্দরটি সংস্কার ও চালু করলে পাল্টে যাবে উত্তরাঞ্চলের দৃশ্যপট। অথচ এই বৃহত্তম বিমানবন্দরটি চালু হলে রংপুর অঞ্চলে ঘটবে এক অর্থনৈতিক বিপ্লব, উম্মোচন হবে যোগাযোগের এক নতুন দ্বার। এমনটাই মনে করেন লালমনিরহাটের শীর্ষ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। বিমানবন্দর চালুর আশায় যুগ যুগ ধরে অপেক্ষায় আছেন তিন জেলার মানুষ। এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে পরিত্যক্ত বিমানবন্দরটি প্রথমদিকে বিমান কারখানা হিসেবে চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কারখানা করার পর যাত্রী পরিবহনের জন্য চালু হবে ফ্লাইট। ২০২১ সালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও বিমান বাহিনী প্রধান বিমানবন্দরটি পরির্দশনে এলে আশার আলো নতুন করে আশা জাগে লালমনিরহাটের মানুষের মনে। বিমানবন্দরটি চালু হলে নেপাল, ভুটান ও ভারতের অন্তত ১৩টি অঙ্গরাজ্যের সব শ্রেণির মানুষ অনায়াসে কম খরচে বাংলাদেশে আসতে পারবে, তেমনিভাবে বাংলাদেশিরাও ভারত, নেপাল ও ভুটানে অল্প খরচে গিয়ে সব কাজ করতে পারবে। এছাড়া লালমনিরহাটের বুড়িমারি স্থলবন্দর, কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দর আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। এ বিমানবন্দর চালু হলে উত্তরাঞ্চলের কোটি মানুষ শিক্ষা, চিকিৎসায় যেমন দ্রুত ওই ৩টি দেশে যেতে পারবে তেমনিভাবে ওই ৩ দেশের হাজারো শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী বাংলাদেশে এসে তাদের কাজ সম্পাদন করতে পারবে। এদিকে লালমনিরহাট বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। দেশে এই প্রথম একটি এভিয়েশন ও অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ে এয়ারক্র্যাফট নির্মাণ, মেরামত, স্যাটেলাইট নির্মাণ, উৎক্ষেপণ, মহাকাশ গবেষণা প্রভৃতি প্রযুক্তির বিষয়ে গবেষণা করা হবে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও লালমনিরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য জি এম কাদের বলেছেন, শিগগিরই লালমনিরহাট বিমানবন্দর ও মোগলহাট স্থলবন্দর চালু হচ্ছে।