গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় শিল্প-কারখানার বজ্রে ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ, পানি ও কৃষিজমি। উপজেলার প্রায় তিন (০৩) শতাদিক শিল্প-কারখানা রয়েছে। যার বেশির ভাগ কলকারখানায় বিষাক্ত পানি ও আবর্জনা নদী নালা খাল বিলে প্রবেশ করছে, যার প্রভাব পড়ছে পরিবেশ, পানি,কৃষিজমিতে। বেশির ভাগ কলকারখানা ইটিপি না থাকায় পানি সংশোধন করা হচ্ছে না, যার প্রভাবে নদী, নালা খাল, বিলে এসে সব নষ্ট হচ্ছে । পানি ও বর্জ্য শোধনের ব্যবস্থা না থাকায় এলাকার মানুষ দুর্গন্ধে জীবন যাপন করছে। নিয়মানুযায়ী ইটিপির মাধ্যমে পানি ও বর্জ্য পরিশোধন করার কথা থাকলেও মানছেন না বেশির ভাগ শিল্প কারখানা কর্তৃপক্ষ। প্রায় তিন শতাধিক শিল্প কারখানার বেশির ভাগই তাদের নিজস্ব কোন ইটিপির ব্যবস্থা নেই। আর যাদের আছে তারাও বেশির ভাগ সময় তাদের ইটিপির কার্যক্রম বন্ধ। যারা মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন তারা জানান, আমরা নদীতে বা বিলে মাছ শিকার করার জন্য নামলে আমাদের শরীরে চুলকানি সহ নানা রকম চর্ম রোগে আক্রান্ত হই। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার মাজুখান, রতনপুর, সিনাবহ, মাটিকাটা, কৌচাকুড়ি, আমদাইর, শোলহাটি, বাঁশতলি বড়ইবাড়ী, এলাকার অনেক কৃষকের জমির বোরো আবাদ বন্ধ হয়ে গেছে। কৃষক শ্যামল সরকার জানান, মকল বিলে আগে প্রচুর পরিমান ধান চাষ হত। এখন কোন ধান চাষ করতে পারি না। কলকারখানার বিষাক্ত জল এসে সব কৃষি জমি নষ্ট হয়ে গেছে। শোলহাটি চন্দন জানান, আমাদের বেশির ভাগ জমি পঁচা জলের নিচে ডুবে থাকে, যাও চাষ করি তাও আবার পচাঁ জল এসে সব নষ্ট করে দেয়। আমির হোসেন জানান, কলকারখানা বিষাক্ত পানি এসে পরিবেশ নষ্টের পাশাপাশি শরীরে রোগ ব্যাধি হচ্ছে । ঘর বাড়ি টিন সব একবছরের মধ্যে ছিদ্র ছিদ্র হয়ে যায়। খুবই কঠিন অবস্থায় জীবন যাপন করছি। হারিজ,মন্টু,আলহাজ জানান, বেশির ভাগ জমি সবসময় বর্জ্য পদার্থ দিয়ে পানিতে ডুবে থাকে। এর জন্য বোরো চাষ বন্ধ থাকার জন্য আমরা যারা কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল আমাদের স্ত্রী-পুত্র সংসার নিয়ে কোন রকম দিনাপাত করছি। শীঘ্রই তারা এ বর্জ্য অপসারণের দাবী জানাই। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে জানালেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ফলে বিভিন্ন এলাকার কৃষকের আয়-রোজগার কমে গেছে। কালিয়াকৈর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, কলকারখানাগুলোতে ইটিপি না থাকার কারনে পানি গুলো নষ্ট হয়ে কৃষি জমি, পানি,মাছ , পরিবেশ সবই নষ্ট হচ্ছে। কালিয়াকৈর উপজেলা নিবার্হী অফিসার তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, যেসব কারখানার ইটিপি নেই বা পানি শোধনাগার ব্যবস্থা করা হয়নি তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত অভিযান চালানো হবে।