কুষ্টিয়া বিএডিসি (সার) অফিসের সহকারী পরিচালক মহিউদ্দিন মিয়া’র বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন কুষ্টিয়া বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশন (বিএফএ)’র কুষ্টিয়া জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ ও সাধারন ডিলাররা। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সমন্বয় কক্ষে বিএফএ কুষ্টিয়া জেলা শাখার নেতৃবৃন্দদের সাথে গত ২৮ এপ্রিলে জেলা প্রশাসকের সাথে সমন্বয় মিটিং হয়। উক্ত মিটিংএ ডিলার নেতৃবৃন্দ বাদেও অন্যান্য ডিলারগন উপস্থিত ছিলেন কিন্তু উক্ত মিটিংএ মহিউদ্দিন মিয়া অজুহাত দেখিয়ে উপস্থিত না হয়ে উপস্থিত করেছিলেন যুগ্ন পরিচালক ওসমান গনিকে। উক্ত মিটিং এ জেলার সভাপতি ও কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ অজয় সূরেখা ও সাধারন সম্পাদক আক্কাস আলী জেলা প্রশাসককে জানান, বর্তমান এডি ২০.০৫.২০২২ তারিখে অত্র অফিসে যোগদান করে কিছু অসাধু ডিলারদের সাথে সম্পর্ক তৈরী করে আর্থিক দূর্ণীতি করে যাচ্ছেন। তারই জের ধরে গত বছর এডি লেবারদেরকে উস্কে দিয়ে ডিলারদেরকে শারিরিকভাবে লাঞ্চিত করেছিল যা নিউজসহ ভিডিও নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। নেতৃবৃন্দরা বলেন, কতিপয় দালাল ডিলারদের সহযোগিতায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকার বাণিজ্য করে যাচ্ছেন। তারা বলেন, গত মার্চ মাসে তিউনিশিয়ার টিএসপি সার কুষ্টিয়া গোডাউনে আসলেও তিনি তার বরাদ্দ দেন নাই। এই সারের ব্যাপক চাহিদা থাকায় গোডাউনের এক কর্ণারে লুকিয়ে রাখে এবং তার দালাল ডিলারদের মাধ্যামে অতিরিক্তি অর্থের বিনিময়ে পে-অর্ডারের মাধ্যমে তা বিতরণ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় নজরুল ইসলাম নজু নামের এক ডিলারকে বরাদ্দপত্র বাদেই গত এপ্রিল মাসের ২০ তারিখে গোপনে ঐ সার ট্রাকে লেবারদের দিয়ে তুলে দেওয়ার সময় অন্য এক ডিলার এসে হাতে নাতে ধরে ফেললে তাৎক্ষনিক ভাবে তাকে ৪৫ বস্তা টিএসপি সার দিয়ে ম্যানেজ করেন এডি। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে তোড়পাড় সৃষ্টি হলে দ্রুত কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর থেকে বরাদ্দপত্র এনে ১৫ বস্তা করে সার দেন। প্রেরিত সারের অনুকূলে তিনটি জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অপরিদপ্তর থেকে প্রতিটা জেলার ডিলারদেরকে সার গুলো বিভাজন করে বাজারজাতকরণের জন্য কুষ্টিয়া বিএডিসি অফিসে প্রেরণ করেন। উক্ত বরাদ্দকৃত লিস্ট ডিলারদের হাতে না দিয়ে ফোনে জানিয়ে দেন বর্তমান এডি। এটা অবগত হওয়ার পর বিএডিসি অফিসের অনুকূলে পে-অর্ডার করেও তারা টিএসপি সার পান না বলে অভিযোগ করেন। অন্যদিকে গত ২১ শে এপ্রিল তারিখে অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে ৪০০+৪০০= ৮০০ বস্তা দুই ট্রাক টিএসপি সার মেহেরপুরের এক ডিলারের গোডাউনে আনলোড করার সময় অন্যান্য ডিলারদের হাতে ধরা পড়ে। এভাবে মাসে ২/৩ বার অবৈধভাবে তার সিন্ডিকেটধারী ডিলারদেরকে প্রদান করেন বলে তারা জানান। তারা এটাও বলেন আমরা ডিলাররা তার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছি কারন, বরাদ্দের অনুকুলে প্রতিবস্তা টিএসপি সার নিতে আমাদেরকে দিতে হয় ১৩০ টাকা ও ক্যানাডার এমওপি সার বস্তা প্রতি দিতে হয় ৩০ টাকা করে। উক্ত টাকা নেওয়ার কোন বিধান নেই এই টাকা এডি’র ঘনিষ্ঠ দু’জন অনুসারী গিয়াস ও মহিউদ্দিনের হাতে নগদে দিতে হয় বলে ডিলাররা জানান। এদিকে ডিলার নজু প্রতিদিন সকাল থেকে এডির চেম্বারে থাকেন, তিনি বাড়ী না যাওয়া পর্যন্ত নজুু অফিসেই অবস্থান করেন। তারা এটাও বলেন নজুর নির্দেশে এডি তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। যা অন্য কোন ডিলাররা বেশী সময় অবস্থান করেন না। কাজ শেষ হয়ে গেলে বের হয়ে যায়। অফিসের সিসি টিভি ফুটেজ চেক করলেই বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল। কুষ্টিয়ার একাধিক সার ডিলার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা কি ফকিরনির সন্তান নাকি, প্রতিটা সার ডিলাররা অনেক সাবলম্বী। অর্থ না থাকলে সার ডিলারের ব্যবসা করা যায় না। আর এই সকল ডিলারদেরকে তিনি অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করেন। এটা আমরা মেনে নিতে পারছি না। সার ডিলারদের উপরোক্ত অভিযোগের বিষয়ের সত্যতা জানতে কুষ্টিয়া বিএডিসি (স্যার) অফিসের এডি মহিউদ্দিন মিয়া’র অফিসে বসে কথা বললে তিনি তা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। তার কথাতেই বোঝা গেল তিনি একজন বদ মেজাজী লোক, তিনি কাউকে তোয়াক্কা করেন না। এক পর্যায়ে তিনি বললেন, আমাকে জেলা প্রশাসক ডেকেছিল ওখান থেকে এই মাত্র আসলাম, তবে জেলা প্রশাসকও তদন্ত করছে বলে ডিলাররা জানান।