বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও বৃহত্তর ময়মনসিংহ গবেষণা ফাউন্ডেশন এর যৌথ উদ্যোগে ৪ মে শনিবার সন্ধ্যায় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘কেদারনাথ মজুমদার: নির্মাণ-বিনির্মাণের আখ্যান’শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব নাহিদ ইজাহার খান এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেনজাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক জনাব মোঃ কামরুজ্জামান। স্মারক বক্তৃতা প্রদান করেন বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও প্রকাশক জনাব খান মাহবুব। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিসঅর্ডারস ডিপার্টমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাকিম আরিফ এবং বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও অনুবাদক জনাব ফয়েজ আলম। শুভেচ্ছা বক্তৃতা প্রদান করেনবৃহত্তর ময়মনসিংহ গবেষণা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক জনাবসাকী আনোয়ার এবং সভাপতিত্ব করেন বৃহত্তর ময়মনসিংহ গবেষণা ফাউন্ডেশন এবং বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জনাব সাজ্জাদুল হাসান এমপি। প্রবন্ধকার জনাব খান মাহবুব তার প্রবন্ধে বলেন, ময়মনসিংহে বেড়ে ওঠা একজন মানুষ কিভাবে একইসাথে লেখক, প্রকাশক, গবেষক এবং ইতিহাসবিদ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন সেটি তুলে ধরেন। ময়মনসিংহের ইতিহাস কেদারনাথ মজুমদারের অমর সৃষ্টি বলেও প্রবন্ধকার প্রবন্ধে উল্লেখ করেন। প্রধান অতিথি জনাব নাহিদ ইজাহার খান এমপি প্রয়াত কেদারনাথ মজুমদারের স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য ময়মনসিংহের সুধীজনদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করেন। তিনি আরো বলেন, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় কেদারনাথ মজুমদারের স্মৃতি সংরক্ষণে যা যা করা প্রয়োজন সেটা করবে। জনাব ফয়েজ আলম তার আলোচনায় বলেন, কেদারনাথ মজুমদার দারিদ্রতার মধ্যেও ইতিহাস চর্চায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন। জনাব হাকিম আরিফ তার বক্তৃতায় বলেন কেদারনাথ মজুমদারময়মনসিংহের আঞ্চলিক ইতিহাস বিনির্মাণ করে অতলে হারিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করেন। ময়মনসিংহ গীতিকার সংগ্রহ করে ময়মনসিংহের গৌরব। সাহিত্য উপাদানে তুলে ধরেন। অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, আঞ্চলিক ইতিহাসসহ ময়মনসিংহের ইতিহাস বিনির্মাণের জন্য কেদারনাথ মজুমদারকে স্মরণ করতে হবে। ঔপনিবেশিক শাসকরা যে সময় তাদের শিক্ষা সংস্কৃতি এদেশের বিস্তৃত করতে চেয়েছিল সে সময় কেদারনাথ ময়মনসিংহ গীতিকার সংগ্রহ করে ময়মনসিংহের ইতিহাস রচনা করার মাধ্যমে আঞ্চলিক ইতিহাসকে হারিয়ে যাওয়া থেকে সংরক্ষণ করেছিলেন। এজন্য কেদারনাথ আমাদের মাঝে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। স্বাগত ভাষণে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান বলেন বাল্যকাল থেকেই কেদারনাথ মজুমদার নিজ দেশ ও জন্মভূমির ইতিহাস এবং ঐতিহ্য নিয়ে খুব সচেতন ও আগ্রহী ছিলেন। নিজের দেশের প্রতি তাঁর ছিলো গভীর মমত্ববোধ। চাকরির পাশাপাশি কেদারনাথ মজুমদারের সাহিত্যকর্ম ও ইতিহাস নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যান। নানামাত্রিক সাহিত্য বিষয়ক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে একটা সময় কেদারনাথ মজুমদার সাহিত্যের মধ্যমণি হিসেবে পরিণত হন। সভাপতির ভাষণে জনাব সাজ্জাদুল হাসান এমপি বলেন, ময়মনসিংহের গৌরবময় ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য ব্যাপক গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। গবেষণার উপাদান সংগ্রহ অত্যন্ত কঠিন। কারণ আমরা অতীতকে কোনভাবেই সংরক্ষণ করি না।